হয়, তাহা কিরূপে জানাইব? এক লণ্ডন নগর মধ্যে দরিদ্র-শালায় প্রায় এক লক্ষ বিশ হাজার লোক প্রতিপালিত হইতেছে। তদতিরিক্ত অগণ্য অনাথ-নিবাস ও চিকিৎসালয় আছে। ইংলণ্ড দেশ সর্ব্ব দেশ অপেক্ষা ধনশালী এবং তাহার বদান্যতাশক্তি ঈদৃশী যে, তুলনায় কেবল আমেরিকা তাহার সমতুল্য বলিলে বলা যায়।
* * * * * *
ইংলণ্ডের বদান্যতা ও বঙ্গদেশের বদান্যতা ভিন্ন প্রকার। ইংলণ্ডীয় সমাজে যে স্বাধীনতা আছে, বঙ্গসমাজে তাহা নাই। ইংলণ্ডে দানশক্তি পরিমিত ও নির্দ্দিষ্ট পথেই পরিচালিত হইয়া থাকে। বঙ্গদেশে পরোপকার গুণ অজস্র, ও দেশীয় বেগবতী নদীজলের ন্যায় সর্ব্বত্র প্লাবিত করে ও কোন প্রকার নিয়ম মানে না। ইংলণ্ডীয়েরা পর-দুঃখ দূর করিয়াই সন্তুষ্ট হয়। বাঙ্গালীরা দীন জনকে স্বজননির্বিশেষে যুগপৎ করুণা ও স্নেহ দিয়া সন্তুষ্ট করে। এক জন ইংরাজ স্বীয় দাতব্য দানাগারে প্রেরণ করিয়া নিশ্চিন্ত থাকে, বাঙ্গালীরা তদ্রূপ নয়। তাহাদিগের মধ্যে স্বধর্ম্মপরায়ণ ব্যক্তিগণ অতি দরিদ্র হইলেও ভিক্ষুককে মুষ্টিভিক্ষা দিতে কাতরতা অনুভব করে না, এবং অতি দূর জ্ঞাতি-কুটুম্বকেও নিজ ব্যয়ে ভরণপোষণ করিয়া থাকে। সমৃদ্ধিশালী ইংলণ্ডদেশে দারিদ্র্য নিবন্ধন যত দুঃখ ও ক্লেশ আছে, দরিদ্র বঙ্গদেশের অতি নীচ শ্রেণীর মধ্যেও তত দেখা যায় না; তাহার এক মাত্র কারণ বাঙ্গালী জাতির স্বাভাবিক দয়া ও বদান্যতা। বাঙ্গালীদিগের এরূপ স্বাবলম্বন শক্তি জন্মে নাই, যদ্দারা তাহারা প্রতিবাসীগণের সাহায্যনির-