নিকটে দৃষ্টিগোচর হইল। যৎকালে আমরা সাগরতরঙ্গে আন্দোলিত হইতেছিলাম, তৎকালে ঐ সকল পক্ষী সহস্র দলবদ্ধ হইয়া উত্তাল তরঙ্গের সহিত উঠিতে ও নামিতে লাগিল; বোধ হইল, যেন সাগরের নিবিড় নীলকলেবরে শুভ্র অলঙ্কাররাশি পরিশোভিত হইয়া রহিয়াছে।
১০ই মার্চ প্রাতে লঙ্কাদ্বীপের প্রস্তরময় উপকূল নয়নপথে পতিত হইল। যখন কেবল নির্জীব ও অচল পদার্থদ্বারা লোকে পরিবেষ্টিত থাকে, তখন সজীব ও সচল পদার্থমাত্রেই মনোহরণ করে। কি সমুদ্রচর বিহঙ্গ, কি উড্ডীন মৎস্য, কি গমনশীল ষ্টীমার, যাহা দেখা গেল তাহাই চিত্তাকর্ষণ ও মনোরঞ্জন করিতে লাগিল; এবং সে রমণীয়তা দূরদৃষ্ট ভূমিতল দেখিতে দেখিতে ক্রমেই বর্দ্ধিত হইতে লাগিল। আমি এই প্রথমে পর্ব্বত দর্শন করিলাম। সিংহলের দূরস্থ পর্ব্বত অতি মনোহর মেঘমালার ন্যায় বোধ হইল।
১১ই মার্চ প্রাতে প্রায় ৭ ঘণ্টার সময় আমরা গালে পৌছিলাম; এবং আহারাদি সমাপন করণানন্তর ধূমপোত হইতে নামিয়া একখানি ক্ষুদ্র তরিযোগে সিংহলে অবতরণ করলাম। ঐ স্থানটী এক অবিচ্ছিন্ন উপবন বোধ হইল। নারিকেল ও বাঁশ এবং নানাবিধ বৃক্ষ, সুন্দর ও সুগঠন পথের উপর লম্বিত রহিয়াছে, এবং সেই ছায়াময় তরুসমূহের ভিতর দিয়া সামান্য কিন্তু পরিষ্কার কুটার সকল শোভা পাইতেছে। এই স্থানকে স্বর্ণময় বর্ণনা করিয়া বাল্মীকি অত্যুক্তি দোষে দূষিত হইয়াছেন, এ কথা বলা সঙ্গত বোধ হয় না।
প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যেই আমরা ওয়াকালীতে উপস্থিত