ঈশাচরিতামৃত । సెt মাই, সুতরাং পাপদানবের হস্তে তিনি এখন অসহায় বালকবৎ । পিটার কিন্তু তখনও সঙ্গ ছাড়ে নাই, গুপ্তভাবে সকলের পাছে পাছে বিচারালয় পৰ্য্যস্ত গিয়া তথায় গণ্ডগোলের মধ্যে লুকাইয়াছিল। কি নিদারুণ পরীক্ষা। প্রাণের টান আছে অথচ বিশ্বাসের বল নাই । হৃদয়ের প্রিরধন জীবনসখাকে শক্ৰ আসিয়া ধরিয়া লইয়া যাইভেছে চক্ষের সম্মুখে জাহাকে অপমান নির্ধ্যাতন করিতেছে, আহা ! গুরুগত প্রাণ শিষ্যের পক্ষে ইহা কি ক্লেশজনক। সে প্রাণভেদী দৃশ্য চক্ষু খুলিয়া দেখাও যায় না, আবার না দেখিয়৷ একাকী নিরাপদে লুকাইয়াও থাকা যায় না । ব্যাধন্থত মৃগবৎসের পশ্চাতে যেমন তাহার শোকাতুর জননী লুক্কায়িত ভাবে গমন করে পিটার তেমনি গুরুর পশ্চাৎ অনুসরণ করিয়াছিলেন। এরূপ বিপন্নাবস্থার কয় ব্যক্তি ধৰ্ম্মাচার্ঘ্যের সহমরণে যাইতে পারে আমরা জানি না। এক্ষণে যিশুর হুঃখের দুঃখী কেহই আর রহিল না। যেদিকে নেত্রপাত করি সেই দিকে কেবল জয়ধারী কৃতান্ত সম পদাতিক দল। ভীম ভৈরব গর্জনে আস্ফালন করিতে করিতে নগর কঁপাইয়া, সকলকে জাগ ইয়া তাহার। চলিতে লাগিল। জগতের হুঃখে যিনি সতত ব্যাকুল তাহার ভাগ্যে হায়! কেন এ সব কঠোর নিগ্ৰহ। কে বুঝিবে বিধাতার লীলারহস্য। মানবের নিদ্রিত বিবেক, বিকৃত হৃদয়কে জাগাইবার জন্যই বুঝি এইরূপ কৌশল তিনি করিয়া থাকেন। পাপ নিষ্ঠুরাচরণ করিলে তজ্জন্য প্রাণ ব্যথিত হয় কি না, পৃথিবীকে তাহ দেখাইৰার জন্যই এরূপ লীলার অভু্যদয় সন্দেহ নাই। এতদ্বারা পাপের ঘূর্ণিত ৰিকট মূর্তি অঙ্কিত করিয়া তৎপার্থে পুণ্যের রমণীয় সৌন্দর্ঘ্য জগৎকে প্রদর্শন করা হইল। পাপ পুণ্যের গভীর প্রভেদ এইরূপে চিত্রিত না করিলে মোহান্ধ পৃথিবী তাহ সহজে বুঝিতে পারে না। নির্দয় মানব প্রকৃতি নিরপরাধী বিশ্বহিতৈষী ঈশাকে মারিল, কি সে আপনার পদে আপনি কুঠারাঘাত করিল বিধাতা তাহ কৌশলে বুঝাইয়া দিলেন এবং তাহাকে লজ্জিত ও অমৃতপ্ত করিলেন।
পাতা:ঈশাচরিতামৃত.djvu/১০২
অবয়ব