পাতা:ঈশাচরিতামৃত.djvu/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬ ঈশাচরিতামৃত। না করে । যখন সে উহাকে পায় তখন উহাকে স্কন্ধে রাখিয়া মহা আনন্দ প্রকাশ করে। পরে বাড়ী আসিয়া প্রতিবাসী বন্ধু বান্ধবকে বলে যে তোমরাও অামার সঙ্গে আমোদ কর, কারণ আমি সেই হারানো মেষকে পাইয়াছি। স্বৰ্গধামেও তেমনি এক জন অনুতপ্ত পাপীর উদ্ধারের উপলক্ষে সাধুমণ্ডলীতে আনন্দধ্বনি উঠিবে। যে স্ত্রীলোকের দশটি মুদ্রার মধ্যে একটি হারাইয়া যায় সেকি দীপ জালিয়া তন্ন তন্ন করিয়া তাহার অন্বেষণ করে না ? যখন সে তাহ পুনৰ্ব্বার প্রাপ্ত হয় তখন আপনিও আনন্দিত হয় এবং প্রতিবালী অস্ট্রীয়দিগকে ভজন্য আনন্দ প্রকাশ করিতে বলে । “আর একটি উপাখ্যান বলি শ্রবণ কর। কোন গৃহস্থের দুই পুত্র ছিল । কনিষ্ঠপুত্র এক দিন বলিল, পিতঃ ! আমার অংশে যে কিছু সম্পত্তি প্রাপ্য হয় তাহা অামার হস্তে অর্পণ করুন । পিতা উভয় সস্তানকে বিষয় বিভাগ করিয়া দিলেন । কিছু দিনাস্তে কনিষ্ঠ সমস্ত ধন সংগ্ৰহ করিয়া লইয়া এক দূর দেশে চলিয়া গেল এবং তথায় অপরিমিতব্যয়ী হইয়া সৰ্ব্বস্ব অপচয় করিয়া ফেলিল। তাহার সঞ্চিত ধনও নিঃশেষিত হইয়া গেল, ওদিকে আবার দেশের মধ্যে তুর্ভিক্ষও আরস্ত হইল। মহাক্লেশ উপস্থিত, না অন্ন, না বস্ত্র দুঃখের আর অবধি রহিল না। অবশেষে এক গৃহস্থের শূকর পালনের কার্ঘ্যে সে নিযুক্ত হইল। শূকরের মুখভ্রষ্ট তুষ ভক্ষণ দ্বারা ক্ষুধা নিবারণ করিতে চাহিত, কিন্তু তাহারও অনুমতি পাইত না । এক দিন ভাবস্থায় সে একাকী বসিয়া ভাবিতে লাগিল, হায়! আমার পিতার সংসারে যাহারা চাকরী করে তাহাদের ঘরেও প্রচুর অন্নের সংস্থান, আর আমি কিনা এই বিদেশে ক্ষুধায় প্রাণ হারাইতেছি! এখনি আমি পিতার নিকট যাইব এবং তাহাকে গিয়া বলিব, পিতঃ ! আমি ঈশ্বর এবং তোমার বিরুদ্ধে পাপ করিয়াছি, এক্ষণে আমি তোমার পুত্র একথা বলিবারও যোগ্য নহি, কিন্তু আমাকে তোমার এক জন বেতনগ্রাহী ভূত্য করিয়া রাখিতে হইবে ।" এই স্থির করিয়া সে নিতান্ত দীন হীন শীর্ণকায় মলিন বেশে স্বদেশে প্রতি গমন করিল। দূর হইতে পিতা তাহাকে দেখিয়াই একবারে স্নেহে বিগলিত হইলেন এবং দোঁড়িয়া আসিয়া পুত্রের গলদেশ ধারণ পূর্বক মুখচুম্বন করিতে লাগিলেন। তখন পুত্র অমৃতাপ সহকারে বলিতে লাগিল, পিতঃ ! আমি