গেলেন৷ তিনি তথায় উপস্থিত হইবামাত্র, নারদ উচ্চৈঃস্বরে বলিতে লাগিলেন, “যুধিষ্ঠিব ভিন্ন আর কেহই সশরীরে স্বর্গে আসিতে পারেন নাই! ইনিই সকল ধার্মিকের শ্রেষ্ঠ৷”
নারদের কথা শেষ হইলে যুধিষ্ঠির বলিলেন, “আমার ভাইয়েরা যেখানে গিযাছে, সে স্থান ভালোই হউক আর মন্দই হউক, আমিও সেখানে যাইব৷ তাহাদিগকে ছাডিযা আমি থাকিতে চাহি না৷”
তাহা শুনিয়া ইন্দ্র বলিলেন, “মহারাজ! তুমি নিজ পুণ্যবলে এখানে আসিয়াছ, এইখানেই থাক৷ উঁহারা তোমার সমান পুণ্য সঞ্চয় করিতে পারেন নাই৷ উঁহারা কেমন কবি আসিবেন?”
যুধিষ্ঠির তথাপি বলিলেন, “দ্রৌপদী আর আমার ভাইসকল যেখানে, আমি সেইখানেই যাইতে চাহি৷ উহাদিগকে ছাড়িয়া এখানে থাকিতে আমার কিছুতেই ইচ্ছা হইতেছে না৷”
স্বর্গারোহণপর্ব
ধিষ্ঠির স্বর্গে গিয়া দেখিলেন যে, দুর্যোধন সেখানে পরম সুখে বসিয়া আছেন, কিন্তু ভীমার্জুন প্রভৃতি কেহই তথায় নাই৷ ইহাতে তিনি নিতান্ত আশ্চর্য এবং দুঃখিত হইলে, নাবদ তাঁহাকে বুঝাইয়া বলিলেন, “দুর্যোধন ধর্মযুদ্ধে প্রাণ দিয়াছে, আর তিনি ঘোব বিপদেও ভীত হন নাই৷ এই পুণ্যেই তাঁহাব স্বর্গলাভ হইয়াছে!”
তখন যুধিষ্ঠিব দেবতাদিগকে বলিলেন, “হে দেবতাগণ, আমি তো এখানে কর্ণকে দেখিতে পাইতেছি না৷ যে সকল রাজা আমার জন্য যুদ্ধে প্রাণ দিয়াছিলেন, তাঁহারাই বা এখন কোথায়? তাঁহাবা কি স্বর্গে আসিতে পান নাই? তাঁহাদিগকে ছাড়িয়া আমি এ স্থানে কিরূপে থাকিব? কর্ণের জন্য আমার প্রাণে বড়ই ক্লেশ হইতেছে আমি তাঁহাকে দেখিতে চাই৷ ভীম, অর্জুন, নকুল, সহদেব, দ্রৌপদী ইঁহাদিগকে দেখিতে আমার বড়ই ইচ্ছা হইতেছে৷ আমি সত্য কহিতেছি, তাঁহাদিগকে ছাড়িয়া আমি এখানে থাকিতে পাবিব না৷ উঁহাবা যেখানে নাই, সেখানে থাকিয়া আমার কি সুখ? উঁহারা যেখানে আছে, সেই স্থানই আমার স্বর্গ!”
একথায় দেবগণ বলিলেন, “বৎস! তোমার যদি উহাদিগের নিকট যাইবার নিতান্ত ইচ্ছা হইয়া থাকে, তবে শীঘ্র সেখানে যাও৷ ইন্দ্র আমাদিগকে তোমার সকল ইচ্ছই পূর্ণ করিতে বলিয়াছে, সুতরাং আমরা তাহা করিব!”
এই বলিয়া তাঁহারা একজন দেবদূতকে ডাকিয়া বলিলেন, “তুমি শীঘ্র ইহাকে নিয়া ইহার আত্মীয়গণের সহিত দেখা করাও৷”
দেবদূত তখনি যুধিষ্ঠিরকে পথ দেখাইয়া লইয়া চলিল৷ সে বড়ই ভীষণ পথ; পাপীরা উহতে চলাফেরা করে৷ মশা, মাছি কীট, ভল্লুকাদিতে এবং অস্থি, রক্ত-মাংসের কর্দম ও