পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘বাবাগো বাবা, তোর কি শালা? মোর কি মামা? মা’র কি সোদর ভাই? শিলের তলে কুমকুম করে-তুলে দে না বাবা খাই!’

বাঘ সেদিন কার উপর চটে এসেছিল, তাই ছানা দুটোর কথা শুনেই, ঠাস-ঠাস করে তাদের দুটো চড় মারল। তারা কি বলছে, তা ভেবে দেখল না! খাওয়া শেষ হলে সে মেয়েটিকে বলল, ‘আজ পিঠে করিস, বিকেলে খাব। দেখিস যেন ভালো হয়।’ এই বলে সে আবার বেরিয়ে গেল।

বাঘ চলে গেলে পর মেয়েটি শিলের তলা থেকে তার ভাইকে বার করল। তারপর দুজনে খাওয়া-দাওয়া সেরে, উনুন ধরিয়ে তার উপর কড়ায় করে তেল চড়াল। তারপর বাঘের ছানা দুটোকে কেটে, উনুনের উপর ঝুলিয়ে রেখে, ভাই-বোন সেখান থেকে ছুটে পালাল।

বাঘের ছানা উনুনের উপর ঝুলছে, আর ঝাঁৎ-ঝাৎ করে রক্তের ফোঁটা তপ্ত তেলে পড়ছে। রে বা! ঐ পিঠে হচ্ছে। যদি পিঠে ভালো হয় তো ভালো, নইলে আমরা তিন বাপ-বেটায় মিলে রাঁধুনী হতভাগীকে ছিঁড়ে খাব!’

তারপর ঘরে ঢুকেই তো দেখল কি রকম পিঠে হচ্ছে! তখন বাঘ ‘হালুম হালুম’ করে ঘরময় খুঁজতে লাগল। কিন্ত গৃহস্থের মেয়েকে আর কোথায় পাবে! সে ততক্ষণে তার ভাইকে নিয়ে, মা-বাপের কাছে গিয়ে উপস্থিত হয়েছে। আর গ্রামের সকল লোক ছুটে এসে তাদের নিয়ে কি আনন্দই যে করছে কি বলব!


বোকা কুমিরের কথা

কুমির আর শিয়াল মিলে চাষ করতে গেল। কিসের চাষ করবে? আলুর চাষ। আলু হয় মাটির নীচে। তার গাছ থাকে মাটির উপরে, তা দিয়ে কোনো কাজ হয় না। বোকা কুমির সে কথা জানতো না। সে ভাবলে বুঝি আলু তার গাছের ফল।

তাই সে শিয়ালকে ঠকাবার জন্য বললে, ‘গাছের আগার দিক কিন্ত আমার, আর গোড়ার দিক তোমার।’