সঙ্গে তাঁর গানের ভক্ত হয়ে পড়ি। সেইদিনই বুঝতে পারি, সঙ্গীতসাধনায় তিনি সিদ্ধির পথে এগিয়ে গিয়েছেন কতখানি! তাঁর একটিমাত্র গানই তাঁকে উচুদরের শিল্পী ব’লে চিনিয়ে দিতে পারে।
তারপর এখানে ওখানে দিলীপকুমারের সঙ্গে দেখা হয়। আলাপ জমে। ক্রমে পরিচয় ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। নিজের গানের আসর বসলেই তিনি পত্র লিখে আমাকে আমন্ত্রণ করতে ভোলেন না। আমিও “সঙ্গীতসুধা তরে পিপাসিত চিত্ত” নিয়ে যথাস্থানে হাজিরা দিতে ভুলি না—কখনো একাকী এবং কখনো সপরিবারে। এই ভাবে তিনি যে কতদিন আমাদের আনন্দবিধান করেছেন, তার আর সংখ্যা হয় না।
দিলীপকুমারের সঙ্গীতশিক্ষা সুদৃঢ় ভিত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত। তিনি কেবল সুবিখ্যাত সঙ্গীতাচার্যদের কাছে তালিম নিয়ে এলেম লাভ করেননি, গোটা ভারতবর্ষ ঘুরে এখানকার অধিকাংশ প্রথম শ্রেণীর ধুরন্ধর গায়ক-গায়িকার সঙ্গেও সম্বন্ধ স্থাপন করতে পেরেছেন। আমি যখন সাপ্তাহিক “বিজলী”র নিয়মিত লেখক, সেই সময়ে ঐ পত্রিকায় দিলীপকুমারের দেশে দেশে সফরের কাহিনী ও গায়ক-গায়িকাদের বিবরণী প্রকাশিত হ’ত। সেই পরম উপাদেয় রচনাগুলি আমি সাগ্রহে পাঠ করতুম। সেগুলি কেবল সুখপাঠ্য নয়, শিক্ষাপ্রদও বটে। উচ্চাঙ্গের ভারতীয় সঙ্গীত সম্বন্ধে দিলীপকুমার যে ধারণা পোষণ করেন, ঐ নিবন্ধগুলির মধ্যে তার বিশদ পরিচয় আছে। অধিকাংশ স্থলেই তাঁর ধারণার সঙ্গে আমার ধারণা মিলে যায় অবিকল।
কিন্তু কেবল ভারতীয় সঙ্গীতেই দিলীপকুমার প্রভূত অভিজ্ঞতা অর্জন করেননি, য়ুরোপে থাকতে যথেষ্ট জ্ঞান সঞ্চয় করেছেন পাশ্চাত্য সঙ্গীত সম্বন্ধেও। সেখানেও তিনি শুনেছেন অনেক ভালো ভালো শিল্পীর গান এবং তাঁদের কাছ থেকে শিখেছেনও যে অনেক কিছুই, এটকু অনুমান করাও কঠিন নয়।
তিনি হচ্ছেন বিখ্যাত পিতার বিখ্যাত পুত্র—চলতি কথায় যাকে বলে “বাপ কো বেটা”। তাঁর বাবা নাটক, কবিতা ও প্রবন্ধ লিখেছেন,
১৮২