পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (প্রথম বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জগৎশেঠ । R) লাভের সঙ্গে সঙ্গে তিনি সুসন্তানলাভেরও আশীৰ্ব্বাদ প্ৰাপ্ত হইয়াছিলেন । হীরানন্দ গোবৰ্দ্ধন, সদানন্দ, রূপচাদ, মুলুকচাদ, আমীনচাদ, নয়ানচাদ ও মাণিকচাদ নামে সাতটি পুত্র লাভ করেন। ধন্যবাই নামে তাহার একটি কন্যারও উল্লেখ দেখা যায়। শেঠ উদয়চাঁদ নামক কোন এক ফুল্লিকের সহিত তাহার পরিণয় সংঘটিত হয়। হীরানন্দের পুত্ৰ সাতটিই পিতার সুসন্তান হইয়াছিলেন, র্তাহারাও পিতার ন্যায় কাৰ্য্যপটু ও ব্যবসায়িকাৰ্য্যে যৎপরোনাস্তি অভিজ্ঞতা লাভ করেন । এইরূপে “ধনে পুত্ৰে লক্ষ্মীলাভ” করিয়া হীরানন্দ মহানন্দে কালব্যাপন করিতে লাগিলেন। প্ৰথমে ভাগ্যলক্ষ্মীর অনুগ্ৰহ বঞ্চিত হইয়া তিনি সর্বদা নিজ জীবনকে যেরূপ অকিঞ্চিৎকর বিবেচনা করিতেন, এক্ষণে সেই ভাগ্যলক্ষ্মী যেন স্বহস্তে তাঁহাকে আশীৰ্ম্মাল্য পরাইয়া দিলেন, এই চিন্তায় তিনি যার পর নাই উৎফুল্প হইতে লাগিলেন। যখন তাহার গদীর কাৰ্য্য অত্যন্ত বিস্তৃত হইয়া উঠিল, তখন তিনি উত্তরপশ্চিম প্রদেশে ও বাঙ্গালার প্রধান প্ৰধান স্থানে ভিন্ধ ভিন্ন গাদী সংস্থাপনে প্ৰবৃত্ত হইলেন। দিল্লী, আগ্ৰা, পাটনা, ঢাকা প্ৰভৃতি সাতটি স্থানে তিনি সাতটি পুত্রের জন্য সাতটি পৃথক গদী সংস্থাপিত করিয়া দিলেন। তাহার কনিষ্ঠ পুত্ৰ মাণিক চাদ ঢাকার গদীর ভার প্রাপ্ত হন। এই মাণিকচাদ হইতেই মুর্শিদাবাদের জগৎশেঠগণের উৎপত্তি। এইরূপে সাত পুত্রের দ্বারা গদীর কাৰ্য্য সুচারুরূপে নিৰ্বাহিত হইতে দেখিয়া হীরানন্দ যথাসময়ে এ জগৎ হইতে চিরবিদায় গ্ৰহণ করিলেন। উক্ত সাত পুত্রের মধ্যে মাণিকচাদের নামই ক্রমশঃ সমস্ত উত্তর ভারতবর্ষে প্রচারিত হইয়া পড়ে।