পাতা:ওপারের আলো - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( 0.2 ) আশ্বিন মাস-বিজয় দশমী,প্ৰতিমা বিসর্জন দিয়ে কিশোর রায় বাড়ী ফিরেছেন। বাড়ীতে উৎসবের আলো জ্বলছে, চার দিকে বাদ্য ভাণ্ড, হৈ হৈ । সন্ধ্যার পরে বৈঠক খানায় শুয়ে, একটি পাশ-বালিশ আশ্রয় ক’রে কিশোর রায় চোখ বুজে আছেন। দিদিমাকে প্ৰণাম করে এসেছেন। বাড়ীর সকলে তঁকে প্ৰণাম করেছে, বাদ 'একজন। এত বছর বিয়ে হ’য়েছে, কই দশমীর দিন একবারও তা জ্ঞানদা তার পায়ের ধূলো ন্যান নি। যিনি একটিবার প্রণাম কবুলে মন থেকে তিনি আশীবৰ্ব্বানী করতেন, যাতে করে তার সকল পাপ ধুয়ে যেতে পারত, তিনি ত স্বামীকে প্ৰণাম করেন নাই । বিজয়ার দিন ত শত্রু মিলে কোলাকুলি হয়, তিনি কি পাপ করে ছিলেন যে এমন দিনে ও এক বাড়ীতে থেকে জ্ঞানদার সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হ’তে ও বঞ্চিত হয়ে আছেন । ক্ৰমে চােখ বুজে এল, তিনি ঘূমিয়ে পড়লেন। ব:ত্রি প্রায় এগারটার সময় মৃদু মৃদু আঘাত দরজার দিক হ’তে শুনে তিনি উঠে বস্লেন, বৈদ্যুতিক আলো জেলে দরজা খুলে দেখেন জ্ঞানদায়িনী । জ্ঞানদায়িনীর বেণী খুলে গেছে,-সেই মুক্তবেগী কপোল চুম্বন কচ্ছে, চক্ষে অশ্রবিন্দু টল টল কচ্ছে, তিনি এসে স্বামীর হাত চেপে ধরলেন এবং বল্পেন “চল ঘরে যাই, আমার অপরাধ মাপ কর।” কি মিষ্ঠকথা ! “তুমি মাৰ্জনা চাইছ, কিলের মাৰ্জনা ! তোমার অপরাধ কখনই এত গহিত হ’তে পারে না, যা তুমি এমনই ভাবে এলে আমি মাপ না করতে পারি।” এই ভেবে কিশোর রায়ের চােখ দিয়ে টপ টপ করে জল পড়তে লাগল। কিন্তু জ্ঞানদায়িনীর যে দুইবিন্দু জল চােখে এসেছিল তা চোখেই মিলিয়ে গেল । NSONS Ne