পাতা:ওয়ালেসের জীবনবৃত্ত - যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১৬ ওয়ালেসের জীবনবৃত্ত। কিন্তু রাজা হইয়া প্রজার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করা যে ক্রসের পক্ষে অক্ষমশীয় অপরাধ হইয়াছে, তাহা মুক্তকণ্ঠে বলিতে তিনি বিন্দুমাত্র সঙ্কোচ করিলেন না। ক্রসের হয় ওয়ালেসের বাক্যে বিচলিত হইল অবশেষে তাহার পরদিন প্রত্যুষে ডুনিপেসের গির্জায় মিলিত হইকেন বলিয়া পরস্পরের নিকট প্রতিশ্রুত হইয়া সে দিন আপন আপন শিবিরে চলিয়া গেলেন। পরদিন প্রত্যুষে ক্রস দ্বাদশ জন স্কট সঙ্গে করিয়া ও ওয়ালে দশ জন মাত্র সঙ্গে লইয়া যাইবেন এরূপ অঙ্গীকার করিয়া গেলেন। ক্রস ওয়ালেন্সের নিকট বিদায় লইয়া শশব্যস্ত এড ওয়ার্ড-শিবিরে প্রস্থান করিলেন। তথায তিনি রুধিরাক্ত হস্তেই সকলের সঙ্গে এক আহার করিতে বসিলেন। একজন ইংরাজ পরিহাস করিয়া তাহাকে বলিল, “তােমরা-স্কটগণ আপনার রক্ত আপনি খাও।' এই কথা তাহার হৃদয়ে শেল-স্বরূপ বাজিল। তাহারা তাহাকে বার বার হস্ত প্রক্ষালণ করিতে বলিল; কিন্তু তিনি উত্তর করিলেন যে, “এ নিজের রক্ত, ধুইয়া ফেলিবার নহে।” সেই দিন হইতে ক্রসের অসি স্কটলণ্ডের বিরুদ্ধে আর অভুখিত হয় নাই। এদিকে ওয়ালেস্ টর উড অরণ্যাভিমুখে যাত্রা করিলেন। সেখানে তাহার সৈন্যের অাহার বিহারাদি করিয়া নিদ্রা গেল—তিনি নিদ্রার্থী হইয়া শয্যায় গমন কৰিলেন। কিন্তু চক্ষে নিদ্রা আসিল না-সহসা উঠিয়া বসিলেন। প্রিয়বন্ধু ও স্কটিশ বীরবৃন্দের মৃতদেহ ফলকা-রণক্ষেত্রে পড়িয়া আছে—এখনও সমাধি-নিহিত হয় নাই, এই মর্মভেদী চিন্তা তাহাকে আকুলিত করিল। তিনি আরল ম্যালকম, লণ্ডিন, র্যামজে, লডুর, সীটন, ও রিকার্টনের আড়াম, এই কয়' জনকে সঙ্গে লইয়া পঞ্চ সহস্র সুসজ্জিত সৈন্য সহ সেই রাত্রিতেই। রণক্ষেত্রে গমন করিলেন। পুঞ্জীকৃত শবরাশির মধ্য হইতে বাছিয়া বাছিয়া স্কটিশ হত বীরবৃন্দের দেহ বাহির করিলেন। যখন প্রিয়বন্ধু গ্ৰেহামের দেহ পাওয়া গেল, তখন তিনি অশ্বপৃষ্ঠ হইতে অবতরণ করিয়া সেই শব কোলে লইয়া কাদিতে ও বিলাপ করিতে লাগিলেন। তাঁহার ক্রন্দনে ও বিলাপে সকলেই কঁদিতে লাগিল। অবশেষে - -