পাতা:ওয়ালেসের জীবনবৃত্ত - যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩৬ ওয়ালেসের জীবনবৃত্ত। তুমি ইংরাজদিগের হন্তে আমাদিগকে সমর্পণ করিয়া জ্ঞাতি-শত্রুতা সাধিলে। কিন্তু ক্রফোর্ড আনুপূর্বিক সমস্ত বৃত্তান্ত তাহাকে জানাইয়া তাহাকে শান্ত করিলেন, এবং তাহাদিগকে অন্যস্থানে পলায়ন করিতে অনুরােধ করলেন। কিন্তু ওয়ালেস, পলাইতে ‘অস্বীকৃত হইলেন। তিনিও ক্রফোর্ড শুদ্ধ বিশ জন মাত্র সহচর লইয়া সেই প্রকাণ্ড ইংরাজ সেনার সম্মুখীন হইতে কৃত-সঙ্কল্প হইলেন। ওয়ালেস দ্বন্দ্বযুদ্ধে আজ বটলারের সঙ্গে বীর্যপরীক্ষা করিবেন সঙ্কল্প করিলেন—কিন্তু কাপুরুষ বট লার তাহার সহিত দ্বন্দ্বযুদ্ধে অবতীর্ণ হইতে সাহসী না হইয়া সসৈন্য অসহায় ওয়ালেসকে অভিমন্যু বধ করিবেন ভাবিয়াছিলেন। কিন্তু তাহার সঙ্কল্প বিফল হইল। কতি পয় মাত্র স্কট, অতিমানুষ বীরত্বের সহিত সেই দারু-দুর্গ রক্ষা করিতে লাগিলেন। দুর্গ ভেদ করিতে চেষ্টা করায় পঞ্চদশ ইংরাজ-সৈনিক পুরুষ নিহত হইলেন। তখন বট লার আপন সৈন্যদলকে তিন ভাগে বিভক্ত করিয়া তিন দিক হইতে দুর্গ আক্রমণ করিবেন সঙ্কল্প করিয়া সহসা রণক্ষেত্র হইতে অপসৃত হইলেন। রণচতুব ওয়ালেস্ তাহার গৃঢ় অভিপ্রায় বুঝিতে পারিয়া নিজের ক্ষুদ্র সেনাদলকেও তিন ভাগে বিভক্ত করিলেন। লঙ ভিলের অধীনে ছয় জন, উইলিয়মের অধীনেও সেই পরিমাণে সৈন্য রাখিয়া, স্বয়ং পাঁচ জন মাত্র সৈন্য লইয়া দুর্গ রক্ষায় নিযুক্ত হইলেন। তিনি দুর্গের যে দিক রক্ষা করিতেছিলেন, বট লার স্বয়ং সসৈন্য সেই দিকে অগ্রসর হইলেন। কিয়ৎকাল ঘােরতর রণে উভয় সৈন্যই অদ্ভুত বীৰত্ব দেখাইতে লাগিল—কিন্তু মত্ত মাতঙ্গের সহিত তরঙ্কুদল কতক্ষণ যুদ্ধ করিতে পারে ? ইংরাজ সেনা শত্রুর অদ্ভুত বীরত্বে ভয়চকিত হইয়া রণক্ষেত্র হইতে পলায়ন করিল। দেখিতে খেতে তারানাথ তারাগণ সহ গগনাসনে আসিয়া সমাসীন হইলেন। একদিকে বট - লার সসৈন্য নিজ শিবির মধ্যে পান ভােজনাদিতে রত হইলেন। অন্য দিকে স্কটেরা গিরিনিঝরিণীর নির্মল বারিমা পান করিয়া আপনাদিগের দারু-দুর্গে রজনী যাপন করিলেন।