পাতা:ওয়ালেসের জীবনবৃত্ত - যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪৩ ওয়ালেসের জীবনবৃত্ত। ওয়ালেস সেই অরণ্যে আর অধিক দিন থাকিতে অসম্মত হওয়ায়, রমণী ঔদাৰ্য্য গুণে তাহাকে যথেষ্ট রৌপ্যমুদ্রা প্রদান করিলেন, এবং তাহার জ্যেষ্ঠ ও মধ্যম পুত্রদ্বয়কে তাহার সমভিব্যাহারে প্রেরণ করিলেন। আর তাহার পিতৃব্য ও তাহাদিগকে উৎকৃষ্ট ঘােটক ও বীরােচিত পরিচ্ছদ প্রদান করিলেন। সেই রজনীতেই ওয়ালেস্, কালে ও ষ্টিফেন এবং বিধবা রমণীর পুত্রদ্বয়-সমভিব্যাহারে “ডভাফ’ অভিমুখে যাত্রা করিলেন। সা জন গ্ৰেহা নামক এক বৃদ্ধ নাইট—যিনি লার্গস যুদ্ধে বিশেষ দক্ষতা প্রদর্শন করিয়াছিলেন, এই স্থানের অধীশ্বর ছিলেন। তিনি বৃদ্ধকাল শান্তিতে অতিবাহিত করিবার মানসে অগত্যা এড়ওয়ার্ডের সহিত সন্ধিসূত্রে আবদ্ধ হইয়াছিলেন, কিন্তু এড়ওয়ার্ডের অধীনতা স্বীকার করেন নাই। ওয়ালেসকে পাইয়া তিনি পরম প্রীত হইলেন। ওয়ালেস নিরাপদে ও রাজসমাদরে তদীয় দুর্গে তিন দিন অবস্থিতি করিলেন। পিতৃনামে অভিহিত তাহার এক পুত্র ছিল। ইনি যৌবনকালেই প্রান্ত সমরে স্কট রাজ আলেকজাণ্ডারের বিশেষ সাহায্য করাতে তিনি তাহাকে “বারউইকের নাইট” উপাধি প্রদান করেন। এই বীর যুবা পুরুষের সহিত ওয়ালেসের বিশেষ মৈত্রী জন্মিল। তাহাদিগের এই মৈত্রী মৃত্যুতেও বিচ্ছিন্ন হয় নাই। গ্ৰেহাম যত দিন জীবিত ছিলেন, কখন ওয়ালেকে পরিত্যাগ করেন নাই। অরণ্যে, দুর্গে, পথে, রণস্থলে—যেখানে ওয়ালে সেইখানেই গ্ৰেহাম ছায়ার ন্যায় ওয়ালেসের পশ্চাদ্বী। ওয়ালেসের কষ্ট-যন্ত্রণাময় জীবনে গ্ৰেহাম্ তাহার প্রধান শান্তিস্থল ছিলেন। ওয়ালেস্ প্রস্থানােদ্যত হইলে গ্ৰেহা তাহার অনুগমনে কৃতসঙ্কল্প হইলেন। কিন্তু ওয়ালেস নিষেধ করিলেন, বলিলেন–এরূপ বিপদসঙ্কুল বৈপ্লবিক জীবনে ঝাপ দিবার পূর্বে তাহাকে সবিশেষ সতর্কতা শিক্ষা করিতে হইবে; সেই শিক্ষা সমাপ্ত হইলে, তিনি তাহাকে লইয়া যাইবেন; ইতিমধ্যে তিনি তাহাকে সাধ্যানুসারে সৈন্যংগ্রহ করিতে অনুরােধ করিলেন। গ্ৰেহাম্ এ প্রস্তাবে সম্মত হইলেন,