পাতা:ঔপনিষদ ব্রহ্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঔপনিষদ ব্রহ্ম।

প্রত্যক্ষ সন্ধানে লক্ষ্যের দিকে ধাবমান হয়, ব্রহ্মর্ষিদের আত্মা সেই পরম সত্যের মধ্যে প্রবেশ করিয়া তন্ময় হইবার জন্য সেইরূপ আবেগের সহিত ধাবিত হইত। কেবল মাত্র সত্য নিরূপণ নহে, সেই সত্যের মধ্যে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ তাঁহাদের লক্ষ্য ছিল।

 কারণ, সেই সত্য কেবলমাত্র সত্য নহে, তাহা অমৃত। তাহা কেবল আমাদের জ্ঞানের ক্ষেত্র অধিকার করিয়া নাই, তাহাকে আশ্রয় করিয়াই আমাদের আত্মার অমরত্ব। এই জন্য সেই অমৃত পুরুষ ছাড়িয়া আমাদের আত্মার অন্য গতি নাই ঋষিরা ইহা প্রত্যক্ষ জানিয়াছেন এবং বলিয়াছেন—

 স যঃ অন্যম্‌ আত্মনঃ প্রিয়ং ব্রুবাণং ব্রূয়াৎ—

 অর্থাৎ যিনি পরমাত্মা ব্যতীত অন্যকে আপনার প্রিয় করিয়া বলেন—প্রিয়ং রোৎস্যতীতি— তাহাঁর প্রিয় বিনাশ পাইবে! যে সত্য আমাদের জ্ঞানের পক্ষে সকল সত্যের শ্রেষ্ঠ আমাদের আত্মার পক্ষে তাহাই নকল প্রিয়ের প্রিয়তম;—

 তদেতৎ প্রেয়ঃ পুত্রাৎ, প্রেয়োবিত্তাৎ, প্রেয়োহন্যস্মাৎ সর্ব্বস্মাৎ অন্তরতরং যদয়মাত্মা—

 এই যে সর্ব্বাপেক্ষা অন্তরতর পরমাত্মা ইনি আমাদের পুত্র হইতে প্রিয়, বিত্ত হইতে প্রিয়, অন্য সকল হইতে প্রিয়। তিনি শুষ্ক জ্ঞানমাত্র নহেন, তিনি আমাদের আত্মার প্রিয়তম।