পাতা:ঔপনিষদ ব্রহ্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঔপনিষদ ব্রহ্ম।
৪১

মুখের দিকে চাও এবং তাঁহার কর্ম্ম কর। তাহাতে যদি কেহ অপবাদ দেয় তবে সে অপবাদ ললাটের তিলক করিয়া লও; যদি দুঃখ ঘটে সে দুঃখ মুকুটরূপে শিরোধার্য্য করিয়া লও; যদি মৃত্যু আসন্ন হয় তবে তাহাকে অমৃত বলিয়া গ্রহণ কর! অক্ষয় আশায়, অক্ষুণ্ণ বলে, অনন্ত প্রাণের আশ্বাসে, ব্রহ্ম-সেবার পরম গৌরবে সংসারের সঙ্কট পথে সরল হৃদয়ে ঋজু দেহে চলিয়া যাও! সুখের সময় বল, অস্তি—তিনি আছেন, দুঃখের সময় বল, অস্তি—তিনি আছেন, বিপদের সময় বল, অস্তি— তিনি আছেন! পরমাত্মার মধ্যে আত্মার অবাধ স্বাধীনতা, অপরিসীম আনন্দ, অপরাজিত অভয় লাভ করিয়া সমস্ত অপমান দৈন্য গ্লানি নিঃশেষে প্রকাশিত করিয়া ফেল! বল, যে মহান্ আজ আত্মা হইতে বাক্য মন নিবৃত্ত হইয়া আসে আমি সেইখান হইতে আনন্দ লাভ করিয়াছি, আমি কদাচ ভয় করি না, আমি কাহা হইতেও ভয় পাই না— আমার ন জরা, ন মৃত্যু শোকঃ। বল—

ওঁ আপ্যায়ন্তু মমাঙ্গানি-বাক্‌প্রাণশ্চক্ষুঃশ্রোত্রমথো
বলমিন্দ্রিয়াণি চ সর্ব্বাণি সর্ব্বং ব্রহ্মৌপনিষদং।
মাহং ব্রহ্ম নিরাকুর্য্যাং মামা ব্রহ্ম নিরাকরোৎ
অনিয়াকরণমস্তু অনিরাকরণং মেহন্ত।
তদাত্মনি নিরতে য উপনিষৎসু ধর্ম্মাঃ
তে মরি সন্তু তে ময়া সন্তু॥