পাতা:কজ্জলী - পরশুরাম (১৯৪৯).pdf/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কজ্জলী

নোহারিণী সন্ধ্যা। জনবিরল পথ দিয়া চলিয়াছি। শহরের সর্বত্র— উপরে, আরও উপরে, নীচে, আরও নীচে—স্তরে স্তরে অগণিত দীপমালা ফুটিয়া উঠিয়াছে। রাস্তার দু-ধারে ঝোপে জঙ্গলে পাহাড়ী ঝিঁঝির অলৌকিক মূর্ছনা ষড়‍্জ হইতে নিষাদে লাফাইয়া উঠিতেছে। পরিষ্কার আকাশে চাঁদ উঠিয়াছে, কুয়াশার `চিহ্নমাত্র নাই। ঐ মুন-শাইন ভিল।

 কিসের শব্দ? দার্জিলিং শহরে পূবে শিয়াল ছিল না। বর্ধমানের মহারাজা যে-কটা আনিয়া ছাড়িয়া দিয়াছিলেন তারা কি মুন-শাইন ভিলায় উপনিবেশ স্থাপন করিয়াছে? না, শিয়াল নয়, কচি-সংসদ গান গাহিতেছে। গানের কথা ঠিক বোঝা যাইতেছে না, তবে আন্দাজে উপলব্ধি করিলাম, এক অচেন। অজানা অচিন্তনীয়া অরক্ষণীয়া বিশ্বতরুণীর উদ্দেশে কচি-গণ হৃদয়ের ব্যথা নিবেদন করিতেছে। হা নকুড়-মামা, তোমার কপালে এই ছিল?

 আমাকে দেখিয়া সংসদ্ গান বন্ধ করিল। মামা ও কেষ্টকে দেখিলাম না। কেষ্ট আজ বিকালে পৌঁছিয়াছে, কিন্তু কোথায় উঠিয়াছে কেহ জানে না। শীঘ্রই সে মুনশাইন ভিলায় আসিবে এরূপ সংবাদ পাওয়া গিয়াছে।

১৫৮