পাতা:কথামালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
কথামালা।

বৃদ্ধা তাঁহার নিকটে গিয়া কহিলেন, কবিরাজ মহাশয়! আমার চক্ষুর দোষ জন্মিয়াছে, আমি কিছুই দেখিতে পাই না; আপনি আমার চক্ষু ভাল করিয়া দেন; আমি আপনাকে বিলক্ষণ পুরস্কার দিব; কিন্তু, ভাল করিতে না পারিলে, আপনি কিচুই পাইবেন না।

 চিকিৎসক, বৃদ্ধার প্রস্তাবে সম্মত হইয়া, পর দিন, প্রাতঃকালে, তাঁহার আলয়ে উপস্থিত হইলেন। বৃদ্ধার গৃহ নানাবিধ দ্রব্যে পরিপূর্ণ দেখিয়া, চিকিৎসকের অতিশয় লোভ জন্মিল। তিনি স্থির করিলেন, প্রতিদিন, ইহাকে দেখিতে আসিব, এবং এক একটি দ্রব্য লইয়া যাইব। এজন্য, যাহাতে শীঘ্র তাহার পীড়ার শান্তি হইতে পারে, সেরূপ ঔষধ না দিয়া, কিছু দিন গোলমাল করিয়া কাটাইলেন। পরে, একে একে সমস্ত দ্রব্য লইয়া গিয়া, তিনি রীতিমত ঔষধ দিতে আরম্ভ করিলেন। বৃদ্ধার চক্ষু, অল্প দিনেই, পূর্ব্ববৎ, নির্দ্দোষ হইল। তিনি দেখিলেন, তাঁহার গৃহে যে নানাবিধ দ্রব্য ছিল, তাহার একটিও নাই; অনুসন্ধান দ্বারা জানিতে পারিলেন, চিকিৎসক, একে একে, সমুদয় লইয়া গিয়াছেন।