পাতা:কথামালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
কথামালা।

তাহার গুণের পুরস্কার স্বরূপ, সেই স্বর্ণময় ও রজতময় কুঠার দুই খানি তাহাকে দিয়া, অন্তর্হিত হইলেন। সেই দুঃখী ব্যক্তি, অবাক হইয়া, কিয়ৎ ক্ষণ, সেই স্থানে দাঁড়াইয়া রহিল; অনন্তর, গৃহে গিয়া, প্রতিবেশীদের নিকট, এই বৃত্তান্তের সবিশেষ বর্ণন করিল। সকলে বিস্ময়াপন্ন হইলেন।

 এই অদ্ভুত বৃত্তান্ত শুনিয়া, এক ব্যক্তির অতিশয় লোভ জন্মিল। সে পর দিন, প্রাতঃকালে, কুঠার হস্তে লইয়া, নদীর তীরে উপস্থিত হইল, এবং, গাছের গোড়ায় দুই তিন কোপ মারিয়া, যেন হঠাৎ হাত হইতে ফস্কিয়া গেল, এইরূপ ভান করিয়া, কুঠার খানি জলে ফেলিয়া দিল, এবং, হায় কি হইল বলিয়া, উচ্চৈঃ স্বরে রোদন করিতে লাগিল। জলদেবতা, তাহার সম্মুখে উপস্থিত হইয়া, রোদনের কারণ জিজ্ঞাসিলেন। সে, সমস্ত কহিয়া, অতিশয় শোক ও দুঃখপ্রকাশ করিতে লাগিল।

 জলদেবতা, পূর্ব্ববৎ, জলে মগ্ন হইয়া, এক স্বর্ণময় কুঠার হস্তে লইয়া, তাহার সম্মুখে উপস্থিত হইলেন, এবং জিজ্ঞাসা করিলেন, কেমন, এই কি তোমার কুঠার? স্বর্ণময় কুঠার দেখিয়া,