নামিবামাত্র, তীরে ছিল পিছল, ব্যাগ্সমেত অপূর্ব্ব কাদায় পড়িয়া গেল। যেমন পড়া, অম্নি কোথা হইতে এক সুমিষ্ট উচ্চকণ্ঠে তরল হাস্যলহরী উচ্ছ্বসিত হইয়া নিকটবর্ত্তী অশথগাছের পাখীগুলিকে সচকিত করিয়া দিল।
অপূর্ব্ব অত্যন্ত লজ্জিত হইয়া তাড়াতাড়ি আত্মসম্বরণ করিয়া চাহিয়া দেখিল। দেখিল, তীরে মহাজনের নৌকা হইতে নূতন ইট রাশীকৃত করিয়া নামাইয়া রাখা হইয়াছে, তাহারই উপরে বসিয়া একটি মেয়ে হাস্যবেগে এখনি শতধা হইয়া যাইবে এমনি মনে হইতেছে।
অপূর্ব্ব চিনিতে পারিল তাহাদেরই নুতন প্রতিবেশিনীর মেয়ে মৃন্ময়ী। দূরে বড় নদীর ধারে ইহাদের বাড়ি ছিল, সেখানে নদীর ভাঙ্গনে দেশ ত্যাগ করিয়া বছর দুই তিন হইল এই গ্রামে আসিয়া বাস করিতেছে।
এই মেয়েটির অখ্যাতির কথা অনেক শুনিতে পাওয়া যায়। পুরুষ গ্রামবাসীরা স্নেহভরে ইহাকে পাগ্লি বলে কিন্তু গ্রামের গৃহিণীরা ইহার উচ্ছৃংখল স্বভাবে সর্ব্বদা ভীত চিন্তিত শঙ্কান্বিত। গ্রামের যত ছেলেদের সহিতই ইহার খেলা; সমবয়সী মেয়েদের প্রতি অবজ্ঞার সীমা নাই। শিশুরাজ্যে এই মেয়েটি একটি ছোটখাটো বর্গির উপদ্রব বলিলেই হয়।
বাপের আদরের মেয়ে কি না সেই জন্য ইহার এতটা দুর্দ্দান্ত প্রতাপ। এই সম্বন্ধে বন্ধুদের নিকট মৃন্ময়ীর মা স্বামীর বিরুদ্ধে সর্ব্বদা অভিযোগ করিতে ছাড়িত না, অথচ, বাপ