মিলিয়া ভাবী কর্ত্তব্য সম্বন্ধে মৃন্ময়ীকে অহর্নিশি উপদেশ দিতে লাগিল। ক্রীড়াসক্তি, দ্রুতগমন, উচ্চহাস্য, বালকদিগের সহিত আলাপ এবং ক্ষুধা অনুসারে ভোজন সম্বন্ধে সকলেই নিষেধ-পরামর্শ দিয়া বিবাহটাকে বিভীষিকারূপে প্রতিপন্ন করিতে সম্পূর্ণ কৃতকার্য্য হইল। উৎকণ্ঠিত শঙ্কিতহৃদয় মৃন্ময়ী মনে করিল তাহার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং তদবসানে ফাঁসির হুকুম হইয়াছে।
সে দুষ্ট পোনি ঘোড়ার মত ঘাড় বাঁকাইয়া পিছু হটিয়া বলিয়া বসিল, আমি বিবাহ করিব না।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ।
কিন্তু তথাপি বিবাহ করিতে হইল।
তার পরে শিক্ষা আরম্ভ হইল। একরাত্রির মধ্যে মৃন্ময়ীর সমস্ত পৃথিবী অপূর্ব্বর মার অন্তঃপুরে আসিয়া আবদ্ধ হইয়া গেল।
শাশুড়ি সংশোধনকার্য্যে প্রবৃত্ত হইলেন। অত্যন্ত কঠিন মুখ করিয়া কহিলেন, দেখ বাছা, তুমি কিছু আর কচি খুঁকি নও, আমাদের ঘরে অমন বেহায়াপনা করিলে চলিবে না।
শাশুড়ি যে ভাবে বলিলেন মৃন্ময়ী সে ভাবে কথাটা গ্রহণ করিল না। সে ভাবিল এঘরে যদি না চলে তবে বুঝি অন্যত্র যাইতে হইবে। অপরাহ্নে তাহাকে আর দেখা গেল না।