করিতে উদ্যত হইল—কাছাকাছি গিয়া আর পারিল না, খিল্খিল্ করিয়া হাসিয়া উঠিল—এমন দুইবার চেষ্টা করিয়া অবশেষে নিরস্ত হইয়া মুখে কাপড় দিয়া হাসিতে লাগিল। শাসনচ্ছলে অপূর্ব্ব তাহার কর্ণমূল ধরিয়া নাড়িয়া দিল।
অপূর্ব্বর বড় কঠিন পণ। দস্যুবৃত্তি করিয়া কাড়িয়া লুঠিয়া লওয়া সে আত্মাবমাননা মনে করে। সে দেবতার ন্যায় সগৌরবে থাকিয়া স্বেচ্ছানীত উপহার চায়, নিজের হাত দিয়া কিছুই তুলিয়া লইবে না। অত্যধিক হৃদয়-রস-লালসায় হৃদয়ের সংযোগ ব্যতীত কোন সামগ্রীই তাহার মুখে রুচে না।
মৃন্ময়ী আর হাসিল না। তাহাকে প্রত্যুষের আলোকে নির্জ্জন পথ দিয়া তাহার মার বাড়ি রাখিয়া অপূর্ব্ব গৃহে আসিয়া মাতাকে কহিল, “ভাবিয়া দেখিলাম, বৌকে আমার সঙ্গে কলিকাতায় লইয়া গেলে আমার পড়াশুনার ব্যাঘাত হইবে, সেখানে উহারও কেহ সঙ্গিনী নাই। তুমি ত তাহাকে এ বাড়িতে রাখিতে চাও না আমি তাই তাহার মার বাড়িতেই রাখিয়া আসিলাম।”
সুগভীর অভিমানের মধ্যে মাতাপুত্রের বিচ্ছেদ হইল।