অপূর্ব্ব বলিয়া গিয়াছিল, তুমি চিঠি না লিখিলে আমি বাড়ি ফিরিব না। মৃন্ময়ী তাহাই স্মরণ করিয়া একদিন ঘরে দ্বাররুদ্ধ করিয়া চিঠি লিখিতে বসিল। অপূর্ব্ব তাহাকে যে সোণালি পাড়-দেওয়া রঙীন্ কাগজ দিয়াছিল তাহাই বাহির করিয়া বসিয়া ভাবিতে লাগিল। খুব যত্ন করিয়া ধরিয়া লাইন বাঁঁকা করিয়া অঙ্গুলিতে কালি মাখিয়া অক্ষর ছোট বড় করিয়া উপরে কোন সম্বোধন না করিয়া একেবারে লিখিল—তুমি আমাকে চিঠি লেখ না কেন। তুমি কেমন আছ আর তুমি বাড়ি এস। আর কি বলিবার আছে কিছুই ভাবিয়া পাইল না। আসল বক্তব্য কথা সব গুলিই বলা হইয়া গেল বটে, কিন্তু মনুষ্যসমাজে মনের ভাব আর একটু বাহুল্য করিয়া প্রকাশ করা আবশ্যক। মৃন্ময়ীও তাহা বুঝিল; এই জন্য আরো অনেকক্ষণ ভাবিয়া ভাবিয়া আর কয়েকটি নূতন কথা যোগ করিয়া দিল—এইবার তুমি আমাকে চিঠি লিখো, আর কেমন আছ লিখো, আর বাড়ি এস, মা ভাল আছেন বিশু পুঁটি ভাল আছে, কাল আমাদের কালোগরুর বাছুর হয়েছে। —এই বলিয়া চিঠি শেষ করিল। চিঠি লেফাফায় মুড়িয়া প্রত্যেক অক্ষরটির উপর একটি ফোঁটা করিয়া মনের ভালবাসা দিয়া লিখিল শ্রীযুক্ত বাবু অপূর্ব্বকৃষ্ণ রায়। ভালবাসা যতই দিক, তবু লাইন সোজা, অক্ষর সুছাঁদ এবং বানান শুদ্ধ হইল না।
লেফাফায় নামটুকু ব্যতীত আরো যে কিছু লেখা আব