বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কথা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৫০
কথা

ঘরে ফিরে এসে দেখে শিশু অচেতন
জ্বরাবেশে। অঙ্গ যেন অগ্নির মতন;
ঔষধ গিলাতে যায় যত বারবার
পড়ে যায়—কণ্ঠ দিয়া নামিল না আর।
দন্তে দন্তে গেল আঁটি। বৈদ্য শির নাড়ি
ধীরে ধীরে চলি গেল রোগী-গৃহ ছাড়ি।
সন্ধ্যার আঁধারে শূন্য বিধবার ঘরে
একটি মলিন দীপ শয়ন-শিয়রে,
একা শোকাতুরা নারী। শিশু একবার
জ্যোতিহীন আঁখি মেলি যেন চারিধার
খুঁজিল কাহারে। নারী কাঁদিল কাতর—
ও মানিক ওরে সোনা, এই যে মা তোর,
এই যে মায়ের কোল, ভয় কিরে বাপ।
বক্ষে তারে চাপি ধরি’ তার জ্বর-তাপ
চাহিল কাড়িয়া নিতে অঙ্গে আপনার
প্রাণপণে। সহসা বাতাসে গৃহদ্বার
খুলে গেল; ক্ষীণ দীপ নিবিল তখনি,
সহসা বাহির হতে কল কলধ্বনি
পশিল গৃহের মাঝে। চমকিয়া নারী
দাঁড়ায়ে উঠিল বেগে শয্যাতল ছাড়ি,
কহিল, মায়ের ডাক ওই শুনা যায়—
ও মোর দুঃখীর ধন, পেয়েছি উপায়—