পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩২
কপালকুণ্ডলা।

তদ্বিষয়ে যে তাঁহার স্থির সিদ্ধান্তই ছিল যে সাক্ষাতের উদ্দেশ্য দূষ্য না হইলে এমত সাক্ষাতে দোষ নাই—পুৰুষে পুৰুষে বা স্ত্রীলোকে স্ত্রীলোকে যেরূপে সাক্ষাতের অধিকার, স্ত্রী পুৰুষে সাক্ষাতের উভয়েরই সেই রূপ উচিত বলিয়া তাঁহার বোধ ছিল; বিশেষ ব্রাহ্মণবেশী পুৰুষ কি না তাহাতে সন্দেহ। সুতরাং সে সঙ্কোচ অনাবশ্যক, কিন্তু এ সাক্ষাতে মঙ্গল কি অমঙ্গল জন্মিবে তাহাই অনিশ্চিত বলিয়া কপালকুণ্ডলা এত দূর সঙ্কোচ করিতেছিলেন। প্রথমে ব্রাহ্মণবেশীর কথোপকথন, পরে কাপালিকের দর্শন, তৎপরে স্বপ্ন, এই সকল হেতুতে কপালকুণ্ডলার হৃদয়ে আত্মসম্বন্ধে মহাভীতি সঞ্চার হইয়াছিল; নিজ অমঙ্গল যে অদূরবর্ত্তী এমত সন্দেহ প্রবল হইয়াছিল। সেই অমঙ্গল যে কাপালিকের আগমন সহিত সম্বন্ধমিলিত, এমত সন্দেহও অমূলক বোধ হইল না। এই ব্রাহ্মণবেশীকে তাহারই সহচর বোধ হইতেছে—অতএব তাহার সহিত সাক্ষাতে সেই আশঙ্কার বিষয়ীভূত অমঙ্গলে পতিতও হইতে পারেন। সে ত স্পষ্টই বলিয়াছে যে কপালকুণ্ডলা সম্বন্ধেই পরামর্শ হইতেছিল। কিন্তু এমতও হইতে পারে যে ইহা হইতে তন্নিরাকরণ সূচনা হইবে। ব্রাহ্মণকুমার এক ব্যক্তির সহিত গোপনে পরামর্শ করিতেছিল, সে ব্যক্তিকে এই কাপালিক বলিয়া বোধ হয়। সেই কথোপকথনে কাহারও মৃত্যুর সঙ্কল্প প্রকাশ পাইতেছিল; নিতান্ত পক্ষে চিরনির্ব্বাসন। সে কাহার? ব্রাহ্মণবেশীত স্পষ্ট বলিয়াছে যে কপালকুণ্ডলা