পাতা:কবিকঙ্কণ-চণ্ডী (প্রথম ভাগ) - চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হরগৌরীর কলহারম্ভ ΑΣ , দ্বিজ বংশীবদনের মনসামঙ্গলে-বসবাস। বেশারি = রন্ধন মসলা । অথবা, বিশেষ কোনো ব্যঞ্জনের নাম। প্ৰঃ দুগ্ধতুৰী দুগ্ধকুম্মাণ্ড বেসারি লাফরা -চৈতন্যচরিতামৃত। ভাঙ্গিয়া-স” ভন্নজ ধাতু হইতে বা ভাঙ্গা। খণ্ড করিয়া, বিদীর্ণ করিয়া। কুড়ি-স” কুডুব। বিজয়-বাবু বলেন। এটি মোঙ্গল শব্দ। কোরা-স” কুট্ট ধাতু ছেদনে। প্রাচীন বাংলায় কুড় ধাতুর প্রয়োগ সুপ্রচলিত ছিল কুড়িতে কুড়িতে ঠেকিল কুৰ্ম্মর পিঠি।-শূন্যপুরাণ। নখে কোড়ে হনুমান দীর্ঘ সরোবর --কবিকঙ্কণ চণ্ডী ৯২ পৃষ্ঠা । এখন কেবল কুরুণী, নারিকেল-কোরা, কুমড়া-কোরা, মূলা-কোৱা প্রভৃতি দুষ্ট তিনটি শব্দে কুব বা কুড় ধাতুব প্রয়োগ প্ৰচলিত দেখা যায়। প্রঃ নারিকেল কোরা দিয়া বান্ধে মুশুবীর সুপ।-বিজয় গুপ্তের মনসামঙ্গল । নারিকেল-কেরল দেশে নাম-কোল। নাল (উত্তম) + কেলৈ (ফল) =নালকেল = উত্তম ফল।-শ্ৰীবিজয়চন্দ্র মজুমদাব । গুবাক নারিকেল অমৃত সম ফল দাড়িম্ব টালা সাবি সাবি ।-শুন্যপুরাণ । “বাঙ্গালী ও দ্রাবিড় সভ্যতা ও সংস্পর্শ সমালোচনা কবিয়া দেখিতে পাই যে, নাবিকেল, তাম্বল ও চন্দন দ্রাবিড় দেশ তইতেই পাঙ্গালী পাইযাছে। এগুলি দ্রাবিড় দেশে বই নিজস্ব সম্পত্ত্বি । নাবিকেলকে তামিলভাষায় তেন্ন-মরম অর্থাৎ দক্ষিণ দেশের বৃক্ষ বলে। নাবিকেল ফলকে ইহাবা “তেন্নংকাই” ও “তেংকাই” *C2 ( Asiatic Quarterly Rev. July 1897, p. 100) Cézissists ests নাম “নাবীকেলমু”। ৬৪৫ খৃষ্টাব্দে য়ুয়ন চয়ঙ “নাড়ীকের-দ্বীপে”র উল্লেখ করিয়াছেন। বৃহৎসংহিতায় লিখিত আছে যে, নালীকের জাতি নালীকেরাদ্বীপেরই অধিবাসী ছিল। কথা-সরিৎসাগরে নারীকেল নামে একটি বড় ও সুন্দব দ্বীপের কথা আছে । পুবাতত্ত্ববিদগণ স্থিব করিয়াছেন যে প্ৰথমে নারীকেল নিকোবার দ্বীপেই জন্মিত। তথা হইলে সিংহলে আসিয়া সিংহলের উর্বরভূমিতে বহু পরিমাণে জন্মিতে থাকে। দক্ষিণভারত হইতেই বাঙ্গালায় নারিকেলের আগমন হইয়াছে। দ্রাবিড় প্রভাবের পর হইতেই কয়েকটি বিশেষ বিশেষ পূজা ও ক্রিয়ায় নারিকেলের ব্যবহাব দেখিতে পাওয়া যায়। পূর্বের শাস্ত্ৰাদিতে নারিকেলের নামগন্ধই ছিল না । সম্ভবতঃ দ্রাবিড় প্রভাবের অবাস্তর ফলে ক্ৰমশঃ শাস্ত্ৰাদিতেও নারীকেল প্ৰবেশ লাভ করিয়াছে। মহাভারতে নারীকেল অনেক পরে