পাতা:কবিকঙ্কণ চণ্ডী (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

d R কবিকঙ্কণ-চণ্ডী পুথি, কবিকঙ্কণের নিজের পুথি এবং তাহার নকলখানির পাঠ মিলাইয়া বিশুদ্ধ পাঠ উদ্ধার করিতে পারা যায়, তবেই সংস্করণটি সর্বাঙ্গসুন্দর হইতে পারে। তাহা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চণ্ডীর ৩৪ খানি প্ৰাচীন পুথি আছে এবং আমার গৃহেও তিন চারখানি পুথি রহিয়াছে, দরকার হইলে সেগুলি হইতেও সাহায্য লওয়া যাইতে পরিবে । বাঙ্গলার বোর্ড হইতে এই প্ৰস্তাব অনুমোদন করা হইল এবং সম্পাদন করিবার ভার পড়িল তিনজনের উপর। প্ৰথম, অধ্যাপক হৃষীকেশ বসু, দ্বিতীয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে চণ্ডীকাব্য পড়াইবার ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক চারুচন্দ্ৰ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃতীয়তঃ এই ভূমিকার লেখক । হৃষীকেশবাবু প্রথমতঃ সাহিত্য-পরিষদের নকল পুথিখানির পাঠের সঙ্গে কাইতি গ্রামের পুথির পাঠ মিলাইয়া নিজের নকল খানি সংশোধন করিয়া লাইলেন ; তৎপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয়ে দামিন্যা গ্রামে যাইয়া কবিকঙ্কণের ংশধর শ্ৰীযুক্ত অতুলচন্দ্ৰ ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয়ের শরণাপন্ন হন । ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয় দয়া করিয়া মূল পুথিখানি হৃষীকেশ-বাবুকে দেখিতে দেন। সে পুথিখানি তো এক সময় আমার নিকটেই ছিল। হৃষীকেশবাবু লিখিয়াছেন, “এই পুথি ভুজ্জপত্রে লৌহ-লেখনী দ্বারা, স্থানে স্থানে শার অথবা কঞ্চির কলমে, লিখিত বলিয়া মনে হয়। বড়ই দুঃখের বিষয় দামিন্যার পুথির শেষ অংশ নষ্ট হইয়া গিয়াছে, কালকেতুর উপাখ্যান সমগ্ৰ আছে, ইহাই আমাদের পরম সৌভাগ্যের বিষয়।” কিন্তু শ্ৰীমন্তের উপাখ্যানেরও অনেকাংশ আছে, শেষের কয়েকখানি পাতা মাত্র নষ্ট হইয়া গিয়াছে। কৌতুহলী পাঠক সাহিত্য-পরিষদের নকল পুথিখানি দেখিলেই বুঝিতে পরিবেন । রায়নানিবাসী সুলেখক স্বৰ্গীয় অস্বিকাচরণ গুপ্ত মহাশয় এই পুথিখানি লইয়া এক সময়ে গবেষণা করিয়াছিলেন, তখনই সম্ভবতঃ পাতাগুলি খোওয়া যাইয়া থাকিবে । হৃষীকেশবাবু মূল পুথি দেখিয়া পাঠ মিলাইয়া আনিয়াছেন, সুতরাং আমার নিকট যে-সকল অস্ত্ৰ শস্ত্ৰ আছে—অর্থাৎ চণ্ডীকাব্যের প্রাচীন পুথির বহর রহিয়াছে, তাহার সঙ্গে পাঠ মিলাইবার প্রয়োজন হয় নাই । তবে চারু-বাবু পুস্তক সম্পাদন উপলক্ষে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পুস্তকাগারে রক্ষিত তিন চারিখানি পুথি সন্দেহ-স্থলে মাঝে মাঝে দেখিয়া লইয়াছেন।