পাতা:কবিতাসংগ্রহ ৩ - তপোধীর ভট্টাচার্য.pdf/১৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

৩২

এই ছায়াঘেরা পরিত্যক্ত যাদুঘর কাকে যে ইশারা করে
এর ভাঙা বারান্দায়, অন্ধকার হলঘরে
সারিসারি করোটিতে, জীবাশ্মে, আদিম মানুষের কথা
বহুকাল স্তব্ধ হয়ে আছে। ধন্যবাদ দিই
তোমাদের কেননা মানবজন্ম ধন্য হলো এতসব
প্রাক্তনের চিহ্ন বয়ে বয়ে যদিও ইশারা
কিছুই বুঝিনি যাদুঘরে ফিরে-ফিরে আসি আর
এক চিলতে ছায়া মেখে নিয়ে যাই নিজস্ব খামারে
রেণু-রেণু হয়ে মিশে যায় ছায়া ও স্তব্ধতা, অন্ধকার মেশে
প্রতিদিনকার ভ্রষ্টতায়, ক্ষতে ও বিকারে
এই তো মানবজন্ম আমাদের ওগো যাদুঘর

সকাল ৭-৫০॥ তদেব


৩৩

কোনো লেখা আর গূঢ় লেখা নয় যার লিপির আড়ালে
ঝুঁকে পড়ে জলভরা মেঘ, রৌদ্রভরা দিন কিংবা
প্রতিটি অক্ষরে, অনুচ্ছেদে বয়ে যায় প্রচ্ছন্ন নদীর স্রোত
শুকনো খাত জুড়ে যত ধুলো যত বল্মীকের স্তুপ
তাতে কোনো ভাষা নেই স্মৃতি নেই স্পর্শ নেই পরম্পরা নেই
দগ্ধ প্রান্তরের বুক চিরে হাহাকার উড়ে গিয়ে
ঝলসে দেয় মেঘ, আঁধি ঢেকে দেয় দিন, বেলাভূমি
এভাবে বছর যায়, দশক শতক যায় শূন্যে
যা-ই দেখি সব শূন্য, শূন্য থেকে উঠে এসে শূন্যে মিশে যায়
কোনো লেখা আর গূঢ় লেখা নয়

রাত ৯-০৫॥ তদেব

১৩১