পাতা:কমলা - আশুতোষ ভট্টাচার্য্য.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কমলা বিবাহিত্ন পুলের উপরে জননীর যে আর পূব্বের মত পূর্ণাধিকার থাকে না, এ কথা অস্বীকার করা যায় না। যাহাতে একাধিপত্য ছিল তাহাতেই বিভক্তাধিপত্য লইয়া কে সন্তুষ্ট থাকে ? আর সে অনিষ্টপাতের যাহারা হেতু তাঁহাদের প্রতি কোন পুত্ৰবতীই বা প্রীতির চক্ষে চাহিতে পারেন? বিবাহের পূৰ্ব্বে বিরাজের নিজের বলিয়া কোন একটা নির্দিষ্ট ঘর ছিল ন। তখন কলিকাতা হইতে বাড়ীতে আসিয়া তাহার দৃষ্টি সেই নির্দিষ্ট ঘরটার দিকে ছুটিয়া যাইত না। এখন তাহাই হয়। সেই ঘরটায় গিয়া না; বসিলে তাতার মনটা যে বেশ সুস্থির হয় না, কাত্যায়নী সেটা বেশ বুঝিতে পারেন। গৃহ-কৰ্ম্মের অবসরে কমলা কখন কখন একবার রামায়ণ বা মহাভারত লাইয়া বসিত। স্ত্রীলোকের বইপড়া আর তামাকু খাওয়া কাত্যায়নীর চক্ষে তুল্য বিষদৃশ। পাঁচ দিন সহিয়া তিনি একদিন ৰিরাজকে বলিলেন, “মেয়ে-মানুষের আবার বই পড়া কি রে, বিরাজ ? বউমাকে মানা ক’রে দিস, ছিঃ-লক্ষ্মী ছেড়ে যাবে যে !” বিরাজ তদুত্তরে বলিয়াছিল-“কাজ ফেলে বই পড়লেই লক্ষ্মী ছেড়ে যায়, মা ; কাজ কৰ্ম্ম যখন কিছু থাকবে না তখন বাজে গল্প না ক’রে ভাল বই প’ড়তে আর দোষ কি ?” শত দিন সহস্ৰ দফায় কাত্যায়নী দেখিতে পান, পরের মেয়ে ঘরে আসিয়া তাহার ছেলেকে পর করিয়া দিতেছে । শুধুই কি ছেলে ? যে “কত্তা” পূৰ্ব্বে ‘গিামী’ বই আর জানিতেন না, সেই কৰ্ত্তার এখন বউ-মা খাওয়ার কাছে না বসিলে অৰ্দ্ধাশন হয়। কোন বিষয়ের পরামর্শ করিতে হইলেও এখন আর গিল্পীকে দরকার হয় না, বউ মার সঙ্গেই পরামর্শ করেন। । সুধাংশু কাহারও বশীভূত নহে বলিয়াই কাত্যায়নীর ধারণা ছিল। 89