পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৩০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০২
কলিকাতার ইতিহাস

দ্বারা বাগযুদ্ধ করিবার অদ্ভুত শক্তি প্রকাশ পাইত। দুই সম্প্রদায় আসরে অবতীর্ণ হইয়া “কবির লড়াই” করিতে প্রবৃত্ত হইত। এক পক্ষ তৎক্ষণাৎ গীত রচনা করিয়া ও শ্রোতৃমণ্ডলীর সম্মুখে গাহিয়া চাপান দিত; অপর পক্ষ সেই অবসরে তাহার উত্তর-সূচক গীত বচনা করিয়া লইত এবং প্রথম পক্ষ নিবৃত্ত হইলে শ্রোতৃমণ্ডলীর সমুখে তাহা গাহিত। শ্রোতারা এই অদ্ভুত শক্তি দেখিয়া বিস্ময়বিহ্বল হইয়া উচ্চৈঃস্বরে আনন্দ ও প্রশংসা-ধ্বনি করিতে থাকিত। এইরুপে বহুক্ষণ গীতযুদ্ধ চলিত এবং অবশেষে শ্রোতারা জয়পয়াজয়ের বিচার করিয়া দিতেন। হরু ঠাকুরের পূর্ণ নাম হরেকৃষ্ণ দীর্ঘাঙ্গী। কবিদিগের মধ্যে তিনি জাতিতে ব্রাহ্মণ ছিলেন বলিয়া 'ঠাকুর’ আখ্যা প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। নষকৃষ্ণের ভবনেই এইরূপ আমোদের প্রথম সৃষ্টি হয়,—প্রথম “কবির লড়াই” হয়। হরু ঠাকুর নবকৃষ্ণের এরূপ অনুরক্ত ছিলেন যে, নবকৃষ্ণের মৃত্যুর পর তিনি ঐ ব্যবসায় ছাড়িয়া দেন। আখড়াই নামে আর এক প্রকার সঙ্গীতামোদ প্রচলিত ছিল। উক্ত মহারাজ তাহারও একজন প্রসিদ্ধ উৎসাহদাতা ছিলেন। আখড়াই বিষয়ের ওস্তাদ কুলুইচন্দ্র সেন তাঁহার নিকট অনেক উৎসাহ পাইয়াছিলেন। কুলুইচন্দ্রের দূর সর্স্পীয় ভ্রাতা রামনিধি গুপ্ত এ বিষয়ে যথেষ্ট উন্নতি করেন। এই রামনিধি সাধারণতঃ নিধু বাবু নামে পরিচিত। এইরূপে সঙ্গীত-বিদ্যার উপাসক বলিয়া তাঁহার যশঃ চতুর্দ্দিকে ব্যাপ্ত হইতে সুপ্রসিদ্ধ গীতবাদ্যের ওস্তাদগণ তাঁহার নিকট আগমন করিতে, কিন্তু কাহাকেও নিরাশ হইয়া যাইতে হইত না।”

 সঙ্গীতবিদ্যাবিষয়ে শ্রীযুক্ত রাজা সার সৌরীন্দ্রমোহন ঠাকুর যে মহৎ কার্য করিয়াছেন, এস্থলে তাহার উল্লেখ না করিয়া এ