পাতা:কলিকাতা কল্পলতা - রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
প্রথম অধ্যায়

তীর্থ মধ্যে পুণ্যতীর্থ ক্ষিতি মোক্ষ ধাম।
বাগন বলিয়া দেশ কুরুক্ষেত্র নাম।
সপ্তঋষি শাসন বলিয়া সপ্তগ্রাম॥

 পরন্তু যদিও মুর্শিদাবাদের ভঙ্গশান্তে কলিকাতার শ্রীসৌষ্ঠব বুদ্ধি হউক, বস্তুতঃ সরস্বতী নদীর স্রোতমান্দ্যবশতঃ এই সপ্তগ্রাম নগরীর গরিমা হ্রাস হওয়াতেইকলিকাতায় বাণিজ্য লক্ষ্মীর আবির্ভাব হইয়াছে; পূর্ব্বে কি ইউরোপীয় এবং কি এদেশীয় বণিকমাত্রই সপ্তগ্রামে যাইয়া বাণিজ্য করিতেন। সপ্তগ্রামের শ্রীহীনতার অব্যবহিত পরেই পর্তুগীজদের অধীনে কিছুকাল হুগলী নগরের শ্রীবৃদ্ধি হইয়াছিল। কিন্তু সপ্তগ্রামীয় বস্ত্র ব্যবসায়ী বণিকেরা ইউরোপীয়দিগের মধ্যে ইংলণ্ডীয়দিগের সহিত ব্যবসায়ে অধিক লভ্য ওতাহাদিগের অধীনে নির্বিঘ্নে বসতিকরণের সমধিক উপযোগিতা দর্শন করিয়া কলিকাতায় আসিয়া বসতি করিলেন, তদবধি এই নগরের শোভা ও প্রতিভা পদ্মবনের ন্যায় অতি অল্পকালের মধ্যে বর্ধিত হইয়া উঠিল।

অপিচ কলিকাতার প্রাচীনত্বের বিষয় আমরা পুনৰ্বার অনুসরণ করি,—এইস্থান যে নিতান্ত আধুনিকনহে, তাহার বহুল প্রমাণ লব্ধ না হইলেও পুষ্টিপূরকবিলক্ষণ নিদর্শন পাওয়া গিয়াছে। এদেশের একজন প্রাচীন কবি অর্থাৎ মুকুন্দরাম চক্রবর্ত্ত, যিনি কবিকঙ্কণ নামে বিখ্যাত আছেন—তত্রচিত চণ্ডী কাব্যেশ্রীমন্ত সাধুর সিংহল দ্বীপে বাণিজ্য প্রস্থান প্রকরণে এইরূপ লিখিত হইয়াছে। যথা:—

নায়ে তুলে সদাগর নিলমিঠা পানি।
ছাগল মহিষ মেষে পূজিয়া পার্বতী।
বাহ বাহ বলিয়া ডাকেন ফরমাণী।

১১