দেবগণের মর্ত্যে আগমন । । দেবগণ কষ্টহারিণী ঘাটে উপস্থিত হইয় দেখেন ঘাটটা বড় সুন্দররাপে বঁtধান । ভাগীরথী ঘাটের নিকট দিয়া কল কল শব্দে উত্তর-বাহিনী হইয়া প্রবাহিত হইতেছেন। ঘাটে কয়েকটা দেবমূৰ্ত্তি রহিয়াছে এবং কতকগুলি গঙ্গাপুত্র, সন্ন্যাসী, মহাস্ত বাস করিতেছেন । ব্ৰহ্মা কহিলেন, “ বরুণ ! এ ঘাটের নাম কষ্টহারিণী ঘাট হইল কেন ? 攀 বরুণ। এই ঘাটে বসিয়া পূৰ্ব্বে মুদগল ঋষি তপস্যা করিতেন। র্তাহার তপস্যার নিয়ম ছিল, এক পক্ষ উপৰাস করিয়া থাকিবেন এবং পক্ষান্তে এক দিন মাত্র তণ্ডুলকণা সংগ্ৰহ করিয়া আহার করিবেন। তাহার এইরূপ কঠিন তপস্যায় নারায়ণ অত্যন্ত সন্তুষ্ট হইলেন এবং পক্ষাস্তে যখন ঋষি তণ্ডুলকণা সিদ্ধ করিয়৷ আহারের উদ্যোগ করিতেছিলেন ব্রাহ্মণবেশে অতিথি হইয়া দেখা দিলেন । ঋষি অতিথিকে যথাবিধ সৎকার করিয়া সেই ভোজ্য দ্রব্যের অৰ্দ্ধেক প্রদান করিয়া অপরাদ্ধ নিজের আহারের জন্য রাখিলেন । কিন্তু নারায়ণ কছেন, ঐ অপরাদ্ধও তাহাকে না দিলে পরিতৃপ্তরূপ আহার করা হইতেছে না। ঋষি তৎশ্রবণে সমস্ত খাদ্য দ্রব্য র্তাহাকে প্রদান করেন এবং অতিথি বিদায় হইলে সন্তুষ্ট চিত্তে তপস্যা করিতে বসেন । এইরূপে এক পক্ষ অনাহারে গত হইলে দ্বিতীয় পক্ষে আবার যেমন তিনি তণ্ডুলকণা পাক করিয়া আহারের উদ্যোগ করিতেছেন, নারায়ণ পুনরায় অপর এক ব্রাহ্মণের রূপ ধরিয়া আসিয়া অতিথি হইলেন এবং ঋষির সমস্ত থাদ্য দ্রব্য আহার করিয়া প্রস্থান করিলেন। ঋষি সস্তুষ্ট চিত্তে পুনরায় তপস্যা করিতে বসিলেন। এইরূপ দুই পক্ষ অনাহারে থাকিয়া তৃতীয় পক্ষে আহারের উদ্যোগ করিলেন, সেবারও নারায়ণ আসিয়া সমস্ত দ্রব্য আহার করেন । তিনি ভাবিলেন বরিস্কার আহার করিয়া যাইতেছি ; কিন্তু ঋষি অনাহারে থাকিয়া ক্রুদ্ধ না হইয়া বরং উত্তরোত্তর সন্তুষ্টই হইতেছেন ; অতএব ছদ্মবেশী নারায়ণ কহিলেন “ হে মুদগল ! তোমার অভিলখিত বর প্রার্থনা কর । ” খষি কহিলেন “ তুমি আমাকে বর দিতে চাহিতেছ তুমি কে ? " নারায়ণ কহিলেন “ তুমি যাহার জন্য এই কঠিন তপস্যা ব্রত অবলম্বন করিয়াছ,আমি সেই নারায়ণ ।”
পাতা:কল্পদ্রুম তৃতীয় খণ্ড.djvu/৪৬৪
অবয়ব