পাতা:কাঙ্গাল হরিনাথ (দ্বিতীয় খণ্ড) - জলধর সেন.pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বচ্ছ, তরল করিয়া সৃষ্টি করিল ? এবং ইহার উৎপত্তির মূলই বা কি ? ইত্যাদি রূপে অনুসন্ধান-বৃত্তি-প্রবাহ প্ৰবাহিত হইলে শাস্ত্রের বা শাস্ত্রবিদ গুরুর শরণাপন্ন হইয়া ইহার শেষ মীমাংসায় একমাত্র জগৎকৰ্ত্তাই ক্ষিতি, অপ, তেজঃ, মরুৎ ও ব্যোম এই পঞ্চভূত সৃষ্টির কারণ, তিনিই ইহার প্রয়োজন জানিয়া ঐ রূপে সৃষ্টি করিয়াছেন, এবং জলের ধৰ্ম্ম যে শীতলতা তৎস্বরূপও তিনি, ইহা হৃদ্বোধ ও জগন্ময় প্ৰত্যেক পদার্থে তাহার সত্তা অনুভব করাই বিজ্ঞানযোগের অব্যৰ্থ মধুর সিদ্ধফল। ইহা অপেক্ষা ইহার আরও সংক্ষেপ এই যে, ব্ৰহ্মাণ্ডস্থ প্ৰত্যেক পদার্থের বাহাতত্ত্ব হইতে লক্ষ্য করাই বিজ্ঞানযোগের সমাধান। এই বিজ্ঞানযোগের সাধনায় অগ্রসর সাধকই ব্ৰহ্মজ্ঞানে উপনীত হইয়া অনন্ত ব্ৰহ্মাণ্ডে ব্ৰহ্মাণ্ডপতির সত্তা অনুভব পূর্বক ‘জ্ঞানাদেব হি মুক্তি: স্যাৎ শাস্ত্রের এই অব্যৰ্থ সত্য বাক্যের মহাদুজল দৃষ্টান্ত স্বরূপে অবস্থিত হয়েন। বিজ্ঞানযোগসিদ্ধ যোগীই এ সংসারে সীসা সোণ! হীরা কয়লা ও রত্নধূলা প্রভৃতি পার্থিব পদার্থ মাত্রকেই একরূপ দর্শন করেন এবং তঁহাদিগেরই সেই জ্ঞানাঞ্জনরঞ্জিত নেত্ৰেই এই সমুদায় পার্থিব পদার্থ পৃথীবিকার ভিন্ন অন্য কিছু বলিয়া উদ্ভাসিত হয় না। বিজ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞানের ফল এক নহে। বিজ্ঞানের ফল মুক্তি, আর সাধারণ জ্ঞানের ফল বন্ধন। অতএব যাহারা এই দুইয়ের একত্ব সমাধান পূর্বক সাধারণজ্ঞানে অভিমানী হয়, তাহাদিগের ন্যায় মায়ামুগ্ধ অন্ধ জীব। এজগৎ ব্ৰহ্মাণ্ডে আর কে আছে ? যোগতত্ত্ব সম্বন্ধে অন্যান্য কথা আগামী প্ৰস্তাবে বলিবার ইচ্ছা রহিল। এই স্থানে কাঙ্গাল হরিনাথের একটী সঙ্গীত তুলিয়া দিয়া যোগতত্ত্ব সম্বন্ধে অনেক কথা সহজ করিতে চাই। গানটী এই-- শোনা রে, অবোধ কাঙ্গাল, আমি তোরে প্রবোধতত্ত্ব কই৷ ওরে, আমি মেয়ে, আমি ছেলে যুবক যুবতী হই । Ο Σ) 8