পাতা:কাঙ্গাল হরিনাথ (দ্বিতীয় খণ্ড) - জলধর সেন.pdf/১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰকাশের কারণ ইহা কাঙ্গাল স্বয়ংই প্ৰকাশ করিয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন “বাস্তবিক, এই তত্ত্বটী যখন আমরা লিপিবদ্ধ করিতেছিলাম, তখন আমরা ক্ষিপ্তবৎ ব্যবহার করিতে ক্ৰটী করি নাই। কখন কি লিখিয়াছি, মাথা মুণ্ড বলিয়া লেখনীকে বিশ্রামাসনে বসাইয়াছি, কখন পাগলের মত হাসিয়া কঁাদিয়া উঠিয়াছি, কখন এক একটী তত্ত্বের আনন্দস্রোতে ভাসিয়া আপনাকে ভুলিয়া গিয়াছি। আসন পড়িয়া আছে, উপাসনা নাই, আহারীয় প্ৰস্তুত, ক্ষুধা ও ভোজনে স্পাহা নাই, দিনরাত্রি কোন দিক দিয়া যাইতেছে, সে জ্ঞান নাই, বন্ধু বান্ধব উপস্থিত হইলে সম্ভাষণ নাই,- কেবল লিখিতেছি।” জগতে দুই শ্রেণীর সাধক দুই প্রকারে সিদ্ধ হইয়া থাকেন। এক শ্রেণীশাস্ত্রোক্ত গুরুর উপদেশে ব্ৰহ্মতত্ত্বে দীক্ষিত হইয়া সদগুরুর কৃপায় ব্ৰহ্মতত্ত্ব ধারণার সঙ্গে সঙ্গে ব্ৰহ্মাণ্ড-তত্ত্ব ধারণায় সিদ্ধ হন, অপর শ্রেণী—পূৰ্ব্বজন্মের সুরুতিফলে অগ্ৰে নিজেই ব্ৰহ্মাণ্ড-তত্ত্ব সূক্ষ্মীরূপে আলোচনা করিয়া পরে সদগুরুর নির্দেশানুসারে ব্ৰহ্মতত্ত্বে উপনীত হইয়া পরমানন্দ সম্ভোগ করেন। ব্ৰহ্মাণ্ডবেদ প্রচারক কাঙ্গাল শেষোক্ত শ্রেণীর অন্তভুক্ত সাধক। তাই তিনি যেরূপে ব্ৰহ্মাণ্ডতত্ত্বে সমাহিত হইয়া ক্ৰমে ব্ৰহ্মতত্ত্বে উপনীত হইয়াছিলেন, ব্ৰহ্মাণ্ড বেদে তাহারই প্ৰকাশ করিয়া গিয়াছেন। তঁহার প্রচারিত গ্রন্থের নাম “ব্ৰহ্মাণ্ড বেদ” হইবারও তাঁহাই একমাত্র কারণ। যে গ্ৰন্থ পাঠ করিলে ব্ৰহ্মাণ্ডস্থ প্ৰত্যেক পদার্থের অন্তস্তত্ত্ব হইতে ব্ৰহ্মতত্ত্বের বেদ অর্থাৎ জ্ঞান । লাভ করা যায়, তাহাই ব্ৰহ্মাণ্ড বেদ। ব্ৰহ্মাণ্ড বেদের প্রথমে এই পরিদৃশ্যমান ব্ৰহ্মাণ্ডতত্ত্ব হইতে সেই অপৱিত্ৰ দৃশ্য ব্ৰহ্মতত্ত্বের অস্তিত্ব সংস্থাপন এবং সেই নিগুৰ্ণ ব্ৰহ্মপদার্থে রূপ, রস, গন্ধ, । স্পৰ্শ, মমতা প্ৰভৃতির সত্তা ও সচ্চিদানন্দ স্বরূপত্ৰয়ের সরল গভীর তত্ত্বব্যাখ্যা প্ৰভৃতি অতি সুন্দর ও স্পষ্টরূপে প্ৰকটিত হইয়াছে। V)