পাতা:কাঙ্গাল হরিনাথ (দ্বিতীয় খণ্ড) - জলধর সেন.pdf/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যুগল প্লাবিত করে ; ঘনশ্বাসে ঘন ঘন হৃদয়বৃত্তির আনন্দ আবৰ্ত্তন আরম্ভ হয় ; জগৎসংসার ভুলাইয়া ভগবল্লীলাতত্ত্বে কেবল “আমি তুমি” ভিন্ন অন্য অস্তিত্ব লোপ করে এবং ভগবল্লীলাদর্শনে বা শ্রবণে কখন হাসি, কখন ক্ৰন্দন ও কখন উন্মত্তবৎ নৃত্যে উন্মত্ত করে ; সেই ভাবের নামই প্রেম ; এ প্রেমের ভক্তিই শক্তি । পাত্ৰভেদে যেমন ভালবাসার নানা নামভেদ আছে ; অর্থাৎ পিতা মাতা গুরুজনের প্রতি সন্তানের ভালবাসা, তাহা ভক্তি ; পতিপত্নীর পরস্পর যে ভালবাসা তাহা প্ৰেম এবং সমবয়স্কের সহিত সমবয়স্কের বা বন্ধুর সহিত যে ভালবাসা তাহ প্ৰণয়; তদ্রুপ ভক্তির ও সাধনার ভাবভেদে মধুর, বাৎসল্য, সখ্য ও দাস্য প্রভৃতি নানা নামভেদ আছে। কিন্তু স্বরূপতঃ ভক্তি পদার্থ যে এক, ইহা ভক্তমাত্রেরই সূক্ষ্মদৃষ্টির অন্তর্ভুত। অনেকে তুমি প্ৰভু, আমি দাস, এই প্ৰভুদাসরূপে দান্তভাবের সাধনায় উদিত যে পূৰ্ব্বোক্ত অনিৰ্ব্বচনীয় ভােব, তাহাকেই ভক্তি বলিয়া স্বীকার করেন ; অন্য ভাবের সাধনায় উদিত ও অনিৰ্ব্বচনীয় ভাবকে ভক্তি বলিতে চাহেন না। ইহা কখনই সঙ্গত নহে। সকল ভাবের সাধনায় উদিত ভােবই ভক্তিশব্দের বাচ্য। অর্থাৎ ভালবাসা শব্দের ন্যায় ভক্তি ও সাধারণবাচিক অর্থাৎ কোন এক বিশেষভাবে অবরুদ্ধা নহে। কারণ, মধুর, বাৎসল্য, সখ্য ও দান্ত প্রভৃতি যে ভাবের যে কোন সাধক হউন না কেন, তাহার অন্তঃকরণে ঐ ভাবের উদয় হইলেই তঁহকে ভক্তির উদয় বলিয়া স্বীকার করিতে হইবে। বাৎসল্যভাবে যাহার হৃদয় সাধনায় অগ্রসর, তঁহার অন্তঃকরণবৃত্তি দ্রবীভূত হইয়া পুলক, ভাব-গদগদচিত্ততা এবং উন্মত্তবৎ নৃত্য, ক্ৰন্দন ও হাস্য । প্রভৃতি ভক্তিলক্ষণ প্ৰকাশ করিলে তাহাকে কি ভক্তির উদয় বলিয়া অস্বীকার করিবার কাহারও সাধ্য আছে ? কখনই নহে। সেইরূপ মধুর দাস্য প্রভৃতি ভাবে ঐ সমুদায় লক্ষণ প্ৰকাশ পাইলে, তাহাকে ভক্তির R8