পাতা:কাঙ্গাল হরিনাথ (দ্বিতীয় খণ্ড) - জলধর সেন.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৃষ্ঠায় পুরুষ ও প্রকৃতি সম্বন্ধে একটি প্রস্তাব পাইলাম। আমি নিয়ে তাহা উদ্ধৃত করিয়া দিতেছি। কাঙ্গাল লিখিয়াছেন—“যে শক্তি প্ৰকাশ করে, সেই পুরুষ ; ব্ৰহ্ম শক্তি প্রকাশ করেন, অতএব ব্ৰহ্ম পুরুষ। আবার সর্ব শক্তি যাহাতে আছে, সেই পুরুষ ; অতএব ব্ৰহ্ম ও পুরুষ একই কথা । যাহাতে বীজ থাকে, সেই কোষ। কোষ অপেক্ষা বীজ কোমল। পৃথিবীতে স্ত্রী ও পুরুষ দুইই আছে, এবং এই জন্যই সৃষ্টি। স্বভাবতঃ পুরুষ কঠিন, স্ত্রী কোমল। এই কাঠিন্য ও কোমলতার অনুভব জ্ঞান হইতেই, ব্ৰহ্মকে পুরুষ এবং তঁহার শক্তিকে স্ত্রী বলা হইয়াছে। বাস্তবিক পুরুষের ইচ্ছা ও পুরুষ একই কথা। কিন্তু পৃথক অনুভব লীলারসের যেরূপ মাধুৰ্য বৃদ্ধি করিয়াছে, এবং অনির্বচনীয় ব্ৰহ্মানন্দ প্রকাশেরও কিছু উপায় হইয়াছে, তাহা না হইলে কখনই সেরূপ হইত না। শক্তিপ্রকাশের নামই যে পুরুষত্ব, ইহার স্বভাবসিদ্ধ বিস্তর প্রমাণ আছে। পুরুষ কোন বিষয়ে শক্তি প্ৰকাশ করিলেই লোকে তাহাকে পুরুষত্ব বলে ; শক্তি প্ৰকাশ করিতে না পারিলে, আবার তাহাকে পুরুষত্বহীন বলিয়া থাকে। যে পুরুষত্বহীন, তাহার শক্তি নাই। যখন ব্ৰহ্মশক্তির উজ্জল প্ৰভা চারিদিকেই দেখিতেছি, তখন ব্ৰহ্মকে পুরুষ না বলিব কেন ? যখন পুরুষত্ব প্রকাশক ত্ৰিগুণন্থ পুরুষকে আমরা সহজ-জ্ঞানহেতু পুরুষ বলিতেছি, তখন অচিন্ত্যশক্তিপ্রকাশক পুরুষকে আমরা পুরুষ বলিতে আর কোন জ্ঞানের অপেক্ষা করিব? আবার ধৰ্ম্মপথে কৃতাৰ্থতা লাভকেও পুরুষত্ব বলে। এই পুরুষত্ব লাভ অনেক প্রকারে হইয়া থাকে। কেহ কুণ্ডলিনীশক্তির জাগরণ, কেহ অদ্ভুত কাৰ্য্য প্ৰকাশক নানা প্ৰকার শক্তিকে পুরুষত্ব বলিয়া থাকেন। ইহার দ্বারা স্পষ্ট অনুভূত হইতেছে, যে শক্তি লাভ অর্থাৎ শক্তিকে ধারণ করে, সেই পুরুষ। এই যে ব্ৰহ্মাণ্ড প্ৰকাশিনী শক্তি ব্ৰহ্ম হইতে প্ৰকাশ হইতেছে, VN)