পাতা:কাঙ্গাল হরিনাথ (দ্বিতীয় খণ্ড) - জলধর সেন.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করি ; তন্নিমিত্ত আমি পাপের ভাগী হইব কেন ?” দুষ্কৰ্ম্ম অনুষ্ঠানের সময় এই প্ৰবোধবাক্যে লজ্জাভয়ে ভীত মনকে পাপকাৰ্য্য করিতে সাহস প্ৰদান করিয়া থাকে। “ত্বয়া হৃষিকেশ হৃদিস্থিতেন যথা নিযুক্তোহস্মি তথা করোমি”—“হে ভগবান, তুমি আমার হৃদয়ে থাকিয়া যাহা আমাকে করাও তাঁহাই আমি করি।” এই ঋষিবাক্যের অবস্থা ও তাৎপৰ্য্য বুঝিতে না পারিয়া মুর্থ লোকে ঐ ভাবে রত্নহার। ভ্ৰমে বিষধর ভূজঙ্গ ধরিয়া থাকে। কেন না। উক্ত বাক্যটী সাধারণ মানুষ্যের কৰ্ম্মানুষ্ঠান পক্ষে নহে। সাধন করিয়া সাধক যখন চতুর্থাবস্থা প্ৰাপ্ত হন, বালক বালিকার মত একবারে ইন্দ্ৰিয়-বিকারশূন্য হইয়া আত্মপর, মানাপমান, অঙ্গার সুবৰ্ণ, গরল অমৃত, সকলই একরূপ মনে করেন, উক্ত বাক্যটি এই চতুর্থাবস্থাপন্ন সাধকের বাক্য। বাস্তবিক তিনি যাহা করেন তাহা ভগবান করান ; তিনি যাহা বলেন তাহা ভগবান বলান। যেমন সূৰ্য্যালোকে আলোকিত হইয়া চন্দ্ৰ পৃথিবীকে আলোক দান করে, তিনিও তদ্রুপ ব্ৰহ্ম প্ৰবৰ্ত্তনায় প্ৰবৃত্ত হইয়া, বাক্য বলেন এবং কাৰ্য্য করেন। ভগবানের যে অব্যক্ত শক্তি অব্যক্তভাবে জগতের সাক্ষীস্বরূপ হইয়া আছে, তখন তাহার নিকটে তাহা আর অব্যক্ত থাকে না । সাধক তখন জ্যোতিৰ্ম্ময় হন। ইহারই নাম মুক্তি। ভগবান কি, আদৌ যাহাদিগের সে জ্ঞান নাই, যাহাদিগের আত্মা সুৰ্য্যালোকশূন্য চন্দ্রের ন্যায় অন্ধকারময়, পাপাচরণই যাহাদিগের কৰ্ম্ম, এমন ব্যক্তি যদি “যথা নিযুক্তোহস্মি তথা করোমি” এই বাক্যানুসারে কাৰ্য্য করে, তবে সে ব্যক্তি কোন পাপকৰ্ম্মই অকৰ্ত্তব্য মনে করে না। কৰ্ম্মসিন্ধুমন্থনে যেমন নানাপ্রকার অমৃত উখিত হয়, তদ্রুপ গরলও উৎপন্ন হইয়া থাকে।” এইস্থানে কাঙ্গাল আবার গান ধরিয়াছেন। i