কাদম্বরী । ریخته করিতেছে। আমি লোচন উন্মীলন করিলে সে আমাকে জীবিত দেখিয়া অতিশয় হৃষ্ট হইল, বিনয়বাক্যে কহিল ভর্তৃদারিকে ! লজ্জা ও গুরুজনের অপেক্ষা পরিহারপূর্বক প্রসন্ন চিত্তে আমাপে পাঠাইয়া দাও, আমি তোমার চিত্তচোরকে এই স্থানে আনিতেছি। অথবা ইচ্ছা হয় চল, তথায় তোমাকে লইয়া যাই। তোমার আর এরূপ সাংঘাতিক সঙ্কট পুনঃ পুনঃ দেখিতে পারি না। তরলিকে ! আমিও আর এরূপ ক্লেশকর বিরহবেদনা সহ্য করিতে পারি না। চল, প্রাণ থাকিতে থাকিতে সেই প্ৰাণবল্লভের শরণাপন্ন হই। এই বলিয়া তরলিকাকে অবলম্বন করিয়া উঠিলাম। ১ প্রাসাদ হইতে অবরোহণ করিবার উপক্রম করিতেছি এমন সময়ে দক্ষিণ লোচন স্পদ হইল। ছর্নিমিত্ত দর্শনে শঙ্কাতুর হইয়া ভাবিলাম এ আবার কি ! মঙ্গল কৰ্ম্মে অমঙ্গলের লক্ষণ উপস্থিত হয় কেন ? ক্রমে ক্রমে শশধর আকাশমণ্ডলের মধ্যবর্তী হইয়া সুধাসলিলের ন্যায় চন্দনরসের ন্যায় জ্যোৎস্না বিস্তার করিলে, ভূমণ্ডল কৌমুদীময় হইয়া শ্বেতবর্ণ দ্বীপের ন্যায় ও চন্দ্রলোকের ন্যায় বোধ হইতে লাগিল। কুমুদিনী বিকশিত হইল। মধুকর মধুলোভে তথায় বসিতে লাগিল। নানাবিধ কুসুমরেণু হরণ করিয়া সুগন্ধ গন্ধবহ দক্ষিণ দিক্ হইতে মন মন বহিতে লাগিল। ময়ূরগণ উন্মত্ত হইয়া মনোহর স্বরে গান আরম্ভ করিল। কোকিলের কলরবে চতুর্দিক ব্যাপ্ত হইল। আমি কণ্ঠস্থিত সেই অক্ষমালা ও কর্ণস্থিত সেই পারিজাতমঞ্জরী ধারণ করিয়া, রক্তবর্ণ বসনে অবগুষ্ঠিত হইয়া তরলিকার হন্ত ধারণপূর্বক গ্রাসাদের শিখরদেশ হইতে নামিলাম। সৌভাগ্যক্রমে কেহ আমাকে
পাতা:কাদম্বরী (চতুর্থ সংস্করণ).djvu/১১৯
অবয়ব