পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশেষ ক্লেশনাশায় লক্ষ্মীকান্ত নমোহস্তু তে।।

 সহজে বচন মম না হয় খণ্ডন।
 যে শাপ দিলাম ইহা খণ্ডিব কেমন।।
 এত শুনি মুনিবর হইল চিন্তিত।
 নিশ্চয় জানিল মুনি না হয় খণ্ডিত।।
 গৌরমুখ নামে শিষ্য আনিল ডাকিয়া।
 প্আঠাইল নৃপের স্থানে সকল কহিয়া।।
 আজ্ঞা পেয়ে গেল বিপ্র হস্তিনানগর।
 প্রবেশ করিল গিয়া যথা নৃপবর।।
 ব্রাম্ভণ বলেন রাজা শুন সাবধানে।
 মৃগয়া কারণে তুমি গিয়াছিলে বনে।।
 যে দ্বিজের গলে জড়াইলে মৃত সাপ।
 অজ্ঞান তাহার পুত্র ক্রোধে দিল শাপ।।
 পুত্র শাপ দিল তাহা পিতা নাহি জানে।
 সে কারণে আমা পাঠাইল তব স্থানে।।
 শুনি হেন প্রীতিবাক্যে পুত্রেরে কহিল।
 কদাচিৎ শাপান্তর করিতে নারিল।।
 সাত দিনে করিবেক তক্ষক দংশন।
 জানিয়া উপায় শীগ্র করহ রাজন্।।
 ব্জ্রাঘাত হয় তার শুনিয়া বচন।
 আপনারে নিন্দা করি বলেন রাজন্।।
 করিলাম কোন্ কর্ম্ম দুষ্ট কদাচার।
 ব্রাম্ভণেরে হিংসা কৈনু না করি বিচার।।
 আপন মরণ রাজা নাহি চিন্তে মনে।
 ব্রাম্ভণের তাপ হেতু নিন্দয়ে আপনে।।
 ধ্যানেতে ছিলেন মুনি আগে নাহি জানি।
 যে দণ্ড হইল মম সত্য করি মানি।।
 মুনিরাজে জানাইও আমার বিনয়।
 দৈবে যাহা করে তাহা খণ্ডন না হয়।।
 এত বলি ব্রাম্ভণেরে করিয়া মেলানি।
 মন্ত্রণা করয়ে যত মন্ত্রীগণ আনি।।
 তক্ষক দংশিবে সপ্ত দিবস ভিতরে।
 কি করি উপায় শীগ্র জানাও আমারে।।
 মন্রিগণ বলে রাজা কর অবধান।
 মঞ্চ এক উচ্চতর করহ নির্ম্মাণ।।
 উচ্চ এক স্তম্ভে মঞ্চ করিল রচন।
 চতুর্দ্দিকে জাগিয়া রহিল মন্ত্রীগণ।।
 সর্পের যতেক মন্ত্র আছয়ে সংসারে।
 চতুর্দ্দিকে রাখিলেন যোজন বিস্তারে।।
 বেদপ্রজ্ঞ বিপ্র যত সিদ্ধবাক্য যার।
 শত শত চতুর্দ্দিকে রহিল রাজার।।
 তাহে বসি দান ধ্যান করে নৃপবর।
 হরিগুণ শুনে রাজা ধর্ম্মেতে তৎপর।।
          ----
 পরীক্ষিতের নিকট তক্ষকের আগমন
   সৌতি বলে অবধান কর মুনিগণ।
 এমত উপায় বহু কৈল মন্ত্রীগণ।।
 কাশ্যপ নামেতে মুনি সর্পমন্ত্রে গুণী।
 রাজারে দংশিবে লোকমুখে শুনি।।
 ধন ধর্ম্ম যশ পাব ভাবি দ্বিজবর।
 ত্ব্ররা করি গেল দ্বিজ হস্তিনানাগর।।
 তক্ষক আইল বৃদ্ধ ব্রাম্ভণের রূপে।
 বটবৃক্ষতলে দেখা পাইল কাস্যপে।।
 তক্ষক বলিল দ্বিজ আইলে কোথা হ'তে।
 কোথায় গমন তুমি করিচ ত্বরিতে।।
 কাশ্যপ বলিল পরীক্ষিত নরবরে।
 তক্ষক বিষধর আজ দংশিবেক তাঁরে।।
 সে কারণে যাই আমি রাজার সদনে।
 মন্ত্রবলে আমি রক্ষা করিব রাজনে।।
 তক্ষক বলিল তুমি অবোধ ব্রাম্ভণ।
 কার শক্তি আছে রাখে তক্ষক-দংশন।।
 ফিরি নিজ গৃহে হাও শুন দ্বিজবর।
 অকারণে লজ্জা পাবে সভার ভিতর।।
 কাশ্যপ বলিল আমি গুরুমন্ত্রবলে।
 রক্ষিতে পারিব নৃপে তক্ষক দংশিলে।।
 শুনিয়া তক্ষক ক্রুদ্ধ হৈল অতিশয়।
 আমি ত তক্ষক বলি দিল পরিচয়।।
 নিবারিতে পার যদি আমার দংশন।
 এই বৃক্ষ দংশি দেখ করহ রক্ষণ।।
 কাশ্যপ বলিল তুমি দংশ তরুবর।
 মন্ত্রবলে রাখি দেখ তোমার গোচর।।