এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
তপ্ত কঞ্চন-বর্ণাভাং সুপ্রতিষ্ঠাং সুলোচনাং
এতেক বিচার করি যত দৈত্যগণ। করাইল সুরা সহ শুক্রেরে ভোজন।। পুনরাপি দেবযানী বাপে জিজ্ঞাসিল। পুষ্প আনিবারে কচ কাননেতে গেল।। বহুক্ষণ হৈল পিতা কচ না আইল। বোধ হয় দৈত্যগণ পুনশ্চ মারিল।। নশ্চয় মরিব পিতা কচে না দেখিয়া। পুনরাপি তারে পিতা দেহ জীয়াইয়া।। শুক্র বলে দেবযানী না কর বিষাদ। মৃতজন হেতু কেন কর পরিতাপ।। ব্রম্ভা ইন্দ্র চন্দ্র সূর্য্য মরিলা না জীয়ে। তার হেতু কেন মর ক্রন্দন করিয়ে।। দেবযানী বলে পিতা যাই কহ তুমি। নিশ্চয় মরিব কচে না দেখিলে আমি।। কচের যতেক সেবা কহিতে না পারি। কচের সৌজন্য পিতা পাসরিতে নারি।। আজি হৈতে পিতা এই সত্য অঙ্গীকার। শরীর ত্যাজিব আমি করি অনাহার।। এত বলি দেবযানী করিছে ক্রন্দন। প্রবোধিয়া শুক্র বলে মধুর বচন।। কন্যা প্রবোধিয়া শুক্র ভাবিল অন্তরে। ধ্যানে দেখে কচ আছে আপন উদরে।। শুক্র বলে কচ তুমি কহ বিবরণ। আমার উদরে এলে কিসের কারণ।। কচ বলে আমারে মারিয়া দৈত্যগণ। করাইল সুরাসহ তোমায় ভক্ষণ।। এত বলি শুক্র তবে বলে বার বার। তোমারে বাহির কৈলে আমার সংহার।। বাহির না করিলে ব্রাম্ভণ বধ হয়। মরণ হৈতে বড় বিপ্র বধে ভয়।। ব্রম্ভা আদি দেবগণ আছে যতজন। ব্রম্ভবধ পাপে নয় কাহার মোচন।। এত ভাবি কচে শুক্র বলিল বচন। নিশ্চয় দেখি যে পুত্র আমার মরণ।। সঞ্জীবনীমন্ত্র আমি দিতেছি তোমারে। বাহির হইয়া তুমি জীয়াইবে মোরে।। এত বলি মন্ত্র দিল ভৃগুর নন্দন। গর্ভে থাকি কচ করে মন্ত্র অধ্যয়ন।। তবে দৈত্যগুরু নজ খড়্গ করে নিয়া। বাহির করিল কচে উদর চিরিয়া।। হইল বাহির কচ শুক্র ত্যাজে প্রাণ। পুনরাপি জীয়াইল মন্ত্র করি ধ্যান।। তবে মহাক্রূদ্ধ হৈল ভৃগুর নন্দন। সুরা প্রতি শাপ মুনি দিল ততক্ষণ।। ব্রাম্ভণ হইয়া যেই করে সুরাপান। থাকুক পানের কায লয় যদি ঘ্রাণ।। আজি হৈতে সুরাপান করে যেইজন। ব্রম্ভতেজ নষ্ট তার হবে সেই ক্ষণ।। ইহলোকে অপূজিত হবে সেইজন। মরিলে নরকমধ্যে হুইবে গমন।। তবে শুক্র ডাকি বলে দৈত্যগণ প্রতি। মম শিষ্যে মারিলে যে এ কোন্ প্রকৃতি।। আজি হতে পুনঃ কচে কেহ না হিংসিবে। এই বাক্য হেলা কৈলে বড় দুঃখ পাবে।। কচেরে বলিল শুক্র আশ্বাস করিয়া। যথা সুখে বিহরহ নির্ভয় হইয়া।। শুক্রের বচনে কচ নির্ভয় হইল। নানা বিদ্যা ব্রম্ভচর্য্য অধ্যয়ণ কৈল।। বিদ্যা পড়ি শুক্রস্থানে সুরপুরী যায়। দেবযানী কাছে গেল হইতে বিদায়।। এত শুনি দেবযানী বিষন্ন বদন। কচেরে ডাকিয়া তবে বলেন বচন।। আমার দেখহ কচ যৌবন সময়। তোমারে যে দেখি যোগ্য কর পরিণয়।। শুনিয়া বিস্ময় হৈল জীবের কুমার। হেন অনুচিত বাক্য না বলিহ আর।। গুরুর তনয়া তুমি আমার ভগিনী। এমন কুৎসিত কেন বল দেবযানী।। দেবযানী বলে তুমি না কর খণ্ডন। তোমারে করিতে পতি আছে মম মন।। মরেছিলা তুমি জীয়াইনু বার বার। মম বাক্য নাহি রাখ কেমন বিচার।।