বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৮৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাস্থদেব নাম দিল করিয়া আদর। সভামধ্যে কৈল তোমা যাদব ঈশ্বর ॥ বন্ধদেব পুত্র বলি মাস্য করি সবে । দোষাদোষ নাছি লই তাহারি গৌরবে ॥ এই হেতু হইল বড়ই অহঙ্কার । আমারে করছ নিন্দ আরে ছুরাচার ॥ পৃথিবীতে যত মহারাজগণ ছিল । ক্ষত্র সভা মধ্যে তোরে বসিতে না দিল ॥ যুধিষ্ঠির রাজা যবে রাজসূয় কৈল। এক লক্ষ নৃপতিরে বরিয়া আনিল । গৌরব করিয়া ভীষ্ম কহিল তাহাতে । রাজগণ মধ্যে অগ্ৰে তোমায় পূজিতে ॥ ভীষ্মের বচনে ধৰ্ম্ম পুজিল তোমারে । সেই হেতু রুষিল যতেক নরবরে ॥ বলিল সকল রাজা যত কুবচন । সে সকল কথা তব হয় কি স্মরণ ॥ দৈবেতে কহিলে তুমি বাক্য কটুময়। তোমার সভায় কি বসিতে যোগ্য হয় ॥ পরম কপট তুমি অতি দুরাচার। তোমার চাতুরা কেহ নারে বুঝিবার ॥ নিষ্কলঙ্ক নির্দোষ নিষ্পাপ সত্যব্রতী । হেন জনে নিন্দে যেই সেই দুষ্টমতি ॥ তোমার জনকে পূর্বে কেবা নাহি জানে। গিয়াছিল দৈবকীর স্বয়ম্বর স্থানে ॥ দৈবক রাজার কম্বা তোমার জননী । পরম রূপসী বিদ্যাধরী রূপ জিনি ॥ দেখিয়া মোহিত হ’ল জনক তোমার । কম্বা লইবার হেতু করয়ে বিচার ॥ বহু রাজা আসিয়াছে স্বয়ম্বর স্থানে । রথে তুলি লয় কন্ঠ সব বিদ্যমানে ॥ সত্বর গমনে যায় কন্যারে লইয়া । চৌদিকে ভূপতিগণ বেড়িল আসিয় ॥ দেখিয়া হইল বন্ধ ভয়ে কম্পবান । কি করিব কেমনে হইবে পরিত্রাণ ॥ কম্বার কারণে আজি জীবন সংশয় । পলাইতে নাছি শক্তি মজিন্ম নিশ্চয় ॥ ভয়াৰ্ত্ত জানিয়া যত সাধু রাজগণ । | ক্রোধ সম্বরিয়া গেল না করিল রণ ॥ দুষ্ট রাজগণ সঙ্গে বাহুলীক নন্দন । বহর উপরে করে অস্ত্র বরিষণ ॥ দেখিয়া কুপিল শিনি জনক আমার । • সোমদত্ত সনে রণ করিল অপার ॥ রথ অশ্ব সারথি কাটিল ধনুগুণে । হাতাহাতি সমর হইল দুইজনে ॥ কোপেতে জনক মোর ধরি তার চুলে। চড় মারি দস্ত ভাঙ্গি করিল নিৰ্ম্মলে । সকল ভূপতিগণ কৈল উপরোধ। সোমদত্তে ছাড়ি পিতা সম্বরেণ ক্রোধ ॥ ভয়েতে সকল রাজা নিবৃত্ত হইল । আপন আপন দেশে সবে চলি গেল ॥ পিতা স্থানে সোমদত্ত অপমান পেয়ে । শিব আরাধনা করে ঘোর বনে গিয়ে ॥ স্তবে তুষ্ট হয়ে বর যাচে পশুপতি । বর মাগে সোমদত্ত হরে করে স্তুতি ॥ শিনির প্রহারে মম দহে কলেবর । বড় অপমান কৈল সভার ভিতর ॥ তেমতি আমার পুত্র হোকু বলবান । শিনি-পুত্রে মোর পুত্র করে অপমান ॥ সেই হেতু তুরিশ্রব হৈল বলধর । আমি কি কহিব ইহা জানে সৰ্ব্ব নর ॥ এই হেতু আমার করিল অপমান । ন হইল শক্তি তবু বধিতে পরাণ ॥ যে কালে আমার কেশ ধরিল দুৰ্ম্মতি । কুমারের চক্র হেন ফিরিলাম তথি । কত শক্তি ধরে সেই সোমদত্ত-স্থত । | দৈববলে এই কৰ্ম্ম করিল মুদ্ভুত ॥ যেই জন করিল এতেক অপমান । বলে ছলে প্রকারে লইব তার প্রাণ ॥ আমার সাহায্যে হস্ত কাটিল অর্জন । আমি তার মুণ্ড কাটিলাম সেইক্ষণ ॥ ইহাতে পাতকী বড় হইলাম আমি । বড় ধাৰ্ম্মিকেরে লেয়া বসিয়াছ তুমি ।