পাতা:কাশীনাথ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ay মন্দির প্ৰত্যাখ্যানের সবটুকু জ্বালা তাহার গায়ে মাখাইয়া দিয়া গিয়াছে, ইহার প্রতিকার সে কি করিয়া করিবে ? অপৰ্ণাকে তাহার পূজার আসন হইতে টানিয়া আনিয়া, তাহারই সম্মুখে তাহার উপেক্ষিত উপহারটা নিজেই লাথি মারিয়া ভাঙ্গিয়া ফেলিবে, এবং সর্বসমক্ষে ভীষণ প্ৰতিজ্ঞা করিবে যে সে তাহার মুখ আর দেখিবে না ? সে কি করিবে, কত কি বলিবে, কোথায় নিরুদেশ হইয়া চলিয়া যাইবে ; হয় তা ছাই মাখিয়া সন্ন্যাসী হইবে, হয় তা অপর্ণার কোন দারুণ দুর্দিনের দিনে অকস্মাৎ কোথাও হইতে আসিয়া তাহাকে রক্ষা করিবে । এমনি সম্ভব ও অসম্ভব কত রকম উত্তর-প্ৰত্যুত্তর, বাদ-প্ৰতিবাদ তাহার অপমান-পীড়িত মস্তিষ্কের ভিতর অধীরতার সৃষ্টি করিতে লাগিল । ফলে কিন্তু সে তেমনি বসিয়া রহিল, এবং তেমনি কঁাদিতে লাগিল ; কিন্তু কিছুতেই তাহাব এই আগাগোড়া বিশৃঙ্খল সঙ্কল্পের সুদীর্ঘ তালিকা সম্পূর্ণ হইয়া উঠিল না। بی তাহার পর দুই দিন রাত্রি গত হইয়াছে, অমরনাথ ঘরে শুইতে আসে নাই। মা জানিতে পারিয়া বধূকে ডাকিয়া ঈষৎ ভৎসৰ্ণনা করিলেন, পুত্ৰকে ডাকিয়া বুঝাইয়া বলিলেন ; দিদিশাশুড়ী এই সূত্রে, একটু রঙ্গ করিয়া লইলেন। এমনি সাতে প্যাচে ব্যাপারটা লঘু হইয়া গেল। রাত্রে অপর্ণ স্বামীর নিকট ক্ষমা ভিক্ষা চাহিল, বলিল, যদি মনে কষ্ট দিয়ে থাকি তা আমাকে ক্ষমা কর । অমঙ্গনাথ কথা কহিতে পারিল না। শয্যার এক প্ৰান্তে বসিয়া, বিছানার চাদর বার বার টানিয়া পরিষ্কার করিতে লাগিল। সম্মুখেই অপর্ণ দাড়াইয়া, তাহার মান হাসি ; সে আবার কহিল, ক্ষমা করবে না ? অমরনাথ মুখ নিচু করিয়াই বলিল, ক্ষমা কিসের জন্য ? ক্ষমা করিবার অধিকারই বা আমার কি ? অপর্ণ স্বামীর দুই হাত আপনার হাতের ভিতর লইয়া মলিল, ও কথা বলে না। তুমি রাগ করে থাকলে কি আমার চলে ? তুমি ক্ষমা না করলে আমি দাড়াব Rței ? (ris of 33 kv |