পাতা:কিশোর (দ্বিতীয় সংস্করণ) - জলধর সেন.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিশোর আমিওয়ালার নাম হরিনাথ দাস । তাহার বাড়ী যশোহর জেলায় । বহুদিন হইতে সে কলিকাতায় আছে । আমের সময় আম বিক্রয় করে, অন্য সময় কুলপী বরফ বিক্রয় করে । বৎসরে একবার করিয়া বাড়ী যায় , একমাস থাকিয়া আসে । আমরা যে বৎসরের কথা বলিতেছি, সেই বৎসর ফান্থনি মাসে হরিনাথ বাড়ী গিয়াছিল । সেবার তাহদের গ্রামে বড়ই ওলাউঠা লাগিয়াছিল। এই রোগে হরিনাথের সর্বনাশ হইল। প্ৰথমে তাহার পনির বৎসর বয়সের ছেলেটি গেল ; তাহার পর সাত দিন যাইতে না। যাইতেই একমাত্ৰ সন্তানের শোকে তাহার গৃহিণীও সেই পথে চলিয়া গেলেন। হরিনাথের সংসারের সমস্ত বন্ধন খসিয়া গেল । মাস দুই সে আর কলিকাতায় আসিল না ; মনে করিল, আর কেন ? যাদের জন্য রোজগার, তারা ত চ’লে গেল। এখন যা দুপিয়সা হাতে আছে, আর বাড়ী খানি বেচে যা হয়, গুছিয়ে নিয়ে কাশীতে গিয়ে জীবনের বাকী কয়টা দিন কাটাইয়া দিই; কিন্তু তাহার সে সঙ্কল্প কাৰ্য্যে পরিণত হইল না । উপাৰ্জনের স্পাহা, তাহার ছিল না ; কিন্তু কলিকাতার পথে পথে ফিরি করিয়া বেড়ান। তাহার যেন একটা নেশা হইয়া গিয়াছিল। সে অনেক ভাবিয়া চিন্তিয়া কলিকাতায় চলিয়া আসিল; মনে স্থির করিল, আরও কিছু দিন যাক, তারপর কাশী যাইবে। କ8