পাতা:কিশোর (দ্বিতীয় সংস্করণ) - জলধর সেন.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আরো অর্থাৎ র্তাহার ক্লাশে আসিবার পূর্বেই আমরা বোর্ডের উপর বড় বড় অক্ষরে “আরো অর্থাৎ” লিখিয়া রাখিতাম । তিনি ক্লাশে প্ৰবেশ করিলেই, চারিদিক হইতে ঐ কথাই তঁহার কর্ণে পৌঁছিত। তাঁহার সহিত কথা বলিতে গেলেও, আমরা সেই কথার মধ্যে ৫৭টা “আরো অর্থাৎ” ব্যবহার না করিয়া ছাড়িতাম না। সাত দিন পৰ্য্যন্ত পণ্ডিত মহাশয় আমাদিগের ঠাট্টা তামাসা নীরবে সহ করিয়াছিলেন। তাহার পরই তিনি আমাদের স্কুলের কাৰ্য্য ত্যাগ করিলেন। যে দিন তিনি চলিয়া যাইবেন, সেই দিন আমাদের শ্রেণীতে আসিয়া আমাকে ডাকিয়া ছল ছল চক্ষে অতি কাতর বচনে বলিলেন, “দেখ যতীন, আমি-আরো অর্থাৎ-কাল থেকে আর আসছিনে। ভিক্ষা করিয়া-আরো অর্থাৎ-খাব, তবুও-আরো অর্থাৎ --তোমাদের মত ছেলেদের শিক্ষকের কাজ করিব না ।” অতি ধীরে ধীরে এই কয়েকটি কথা বলিয়া পণ্ডিত মহাশয় চলিয়া গেলেন। পণ্ডিত মহাশয়ের এই কয়েকটি কথা শুনিয়া এবং তাহার ছল ছল চক্ষু ও তঁহার মলিন মুখ দেখিয়া আমার তখন বড়ই কষ্ট বোধ হইয়াছিল।. মনে হইয়াছিল, “আমাদের ব্যবহারে বিরক্ত হইয়া এবং অপমান বোধ করিয়া পণ্ডিত মহাশয় চাকুরী ত্যাগ করিয়া গেলেন।” ((