পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২০
কুরু পাণ্ডব
[১১

দেখিয়া মহা উৎসাহসহকারে কার্ম্মুক আনত করিয়া তাঁহর প্রতি শত শত সায়ক প্রয়ােগ করিতে আরম্ভ করিলেন।

 মহাবীর ধনঞ্জয় ক্ষুব্ধ হইয়া প্রথমত অগ্রবর্ত্তী কর্ণের অশ্ব ও সারথি বিনাশপূর্ব্বক তাঁহার মর্ম্মস্থান বিদ্ধ করিলেন এবং পরে কর্ণ রুধিরাক্ত কলেবরে অশ্বথামার রথে আশ্রয় গ্রহণ করিলে তিনি অশ্বথামা ও মদ্ররাজের সহিত যুদ্ধে প্রবৃত্ত লইলেন। কৌরবগণ-নিক্ষিপ্ত শরজালে যে গাঢ় অন্ধকার হইয়াছিল, পার্থ তাহা দিব্যাস্ত্রদ্বারা অনায়াসে দূরীকৃত করিলেন। এই রূপে মহাবীর অর্জ্জুন অরাতিগণের জীবন ও কীর্ত্তি বিলােপ করিয়া মূর্ত্তিমান মৃতুর ন্যায় রণস্থলে ভ্রমণ করিতে লাগিলেন।

 ক্রমে সৈন্যগণ সেই দেবরাজের অশনি-নির্ঘোষতুল্য গাণ্ডীব-টঙ্কারধ্বনি শ্রবণ করিয়া বাতাহত সমুদ্রজলের ন্যায় অতিশয় উদ্ভ্রান্ত হইয়া চতুর্দ্দিকে বিক্ষিপ্ত হইয়া পড়িল। কিন্তু অচিরে সূর্য্যাস্তের আশায় উৎফুল্ল কৌরব-প্রধানগণ পরস্পরের রথ সংশ্লিষ্ট করিয়া অবিচলিতচিত্তে জয়দ্রথকে বেষ্টনপূর্বক অর্জ্জুনের বাণ নিবারণ করিতে লাগিলেন। তন্নিমিত্ত মহাবীর ধনঞ্জয় জয়দ্রথকে আক্রমণ করিবার কোন ছিদ্র প্রাপ্ত হইলেন না।

 এই শঙ্কটের অবস্থায় অস্তগমনােন্মুখ বিভাকর ক্ষণকাল তিমিরাবৃত হইল। ইহাতে কৌরবগণ সূর্য্যকে অস্তগত জ্ঞান করিয়া সতর্কতা পরিত্যাগপূর্ব্বক হর্ষ প্রকাশ করিতে লাগিলেন