পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২২
কুরু পাণ্ডব
[১১

 এ দিকে দুর্যোধন সিন্ধুরাজের নিধনে হতাশ্বাস হইয়া বাষ্পকুললেমে ও দীনবদনে ভগ্নদশন ভুজঙ্গের ন্যায় নিঃশ্বাস পরিত্যাগ করিতে লাগিলেন। তিনি দ্রোণ-সমীপে গমনপূর্ব্বক কহিলেন—

 হে আচার্য্য। অস্মৎপক্ষীয় মহীপালগণের বিনাশ অবলোকন করুন। যে সকল ভূপালগণ আমাকে রাজ্য প্রদান করিবার অভিলাষ করিয়াছিলেন, এক্ষণে তাঁহারা সমস্ত ঐশ্বর্য্য পরিত্যাগপূর্ব্বক ধরাসনে শয়ান রহিয়াছেন। আমি অতি কাপুরুষ, যেহেতু মিত্রগণকে স্বীয় কার্য্য সাধনার্থে মৃত্যুমুখে নিপাতিত করিলাম। হে গুরো! আপনিই আমাদের মৃত্যু বিধান করিয়াছেন। আমার নিমিত্ত যখন এই রাজগণ অরক্ষিত হইয়া বিনষ্ট হইয়াছেন, তখন আর আমার জীবনধারণে প্রয়োজন কি?

 দ্রোণ প্রত্যুত্তরে কহিলেন—

 হে দুর্য্যোধন! কেন অনর্থক আমাকে বাক্যবাণে বিদ্ধ করিতেছ? আমি ত তোমাকে সতত বলিয়াই থাকি যে, অর্জ্জুন অজেয়। আমরা ত্রিলোকমধ্যে যাঁহাকে সর্ব্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা মনে করিতাম, সেই ভীষ্ম ইঁহারই প্রভাবে সমরশায়ী হইলেন। তবে আমি যে তোমার সেন্যরক্ষায় কৃতকার্য্য হইতেছি না, তাহাতে আমার অপরাধ কোথায়? দ্যূত-সভায় শকুনি যে অক্ষনিক্ষেপ করিয়াছিল, সেই গুলি এক্ষণে অর্জ্জুনের হস্তে সুতীক্ষ্ণ শররূপ ধারণ করিয়া তোমার সেন্য বিনষ্ট করিতেছে। অধর্ম্মের ফল হইতে