পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮২
কুরু পাণ্ডব
[৫

 বিরাট কহিলেন―হে বৃহন্নলে! তুমি আমার কন্যা উত্তরা ও অন্যান্য পুরমহিলাগণকে নৃত্য গীতাদি বিষয়ে সুনিপুণ কর, তাহাতে আমার বিলক্ষণ প্রীতিসাধন হইবে। তবে তােমার যেরূপ তেজ ও দীপ্তি প্রকাশ পাইতেছে,তাহাতে এ কার্য্য তােমার নিতান্ত অনুপযুক্ত বিবেচনা হইতেছে।

 রাজার অনুমতি অনুসারে অর্জ্জুন অন্তঃপুরে প্রবেশপূর্ব্বক রাজমহিলাগণের শিক্ষাকার্য্যে নিযুক্ত হইলেন। রাজকুমারী তাঁহাকে পিতার ন্যায় মান্য করিতেন, ক্রমশ তিনি সকলেরই অতিশয় প্রিয়পাত্র হইয়া উঠিলেন। পুরুষদের সহিত অর্জ্জুনের সাক্ষাৎ হইত না; সুতরাং উঁহার পরিচিত হইবারও কোন আশঙ্কা রহিল না।

 পরিশেষে নকুল একদিন অশ্বশালার বাজিসকল নিরীক্ষণ করিতেছেন, এমন সময় তাঁহার অসাধারণ কান্তি রাজার দৃষ্টি আকর্ষণ করিল। তিনি তাঁহাকে সুবিচক্ষণ হয়-তত্ত্ববেত্তা অনুমান করিয়া অনুচরগণকে আদেশ করিলেন—

 ঐ দীপ্তিমান্ পুরুষকে আমার সমক্ষে আনয়ন কর।

 রাজাদেশ জ্ঞাত হইবামাত্র নকুল নিকটে আসিয়া কহিলেন—

 মহারাজের জয় হৌক্! আমি একজন প্রসিদ্ধ অশ্বতত্ত্ববিৎ আমাকে সকলে গ্রন্থিক বলিয়া ডাকে, পুর্ব্বে রাজা যুধিষ্ঠিরের অশ্বশালায় নিযুক্ত ছিলাম, এক্ষণে আপনার নিকট অশ্বপালের কর্ম্ম প্রার্থনা করি। আমি অশ্বগণের প্রকৃতি, শিক্ষা ও চিকিৎসা বিশেষরূপে অবগত আছি।