পাতা:কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কৃষ্ণকলি

গড়িয়ে তার সেবা করে, তবে কেমন হয়? সন্তানহারা অনেক স্ত্রী এতে ভুলে থাকে দেখেছি। তাদের ধারণা হয়, শিশ‍ুকৃষ্ণের সেই বিগ্রহেই নিজের সন্তান লীন হয়ে আছে।

 অজয়। না না নিখিলবাবু, ওসব চলবে না। সুভদ্রার আবার সন্তান হতে পারে, এখনকার শোকও ক্রমশ কমে যাবে, তখন ওই বালগোপাল একটি বোঝা হয়ে পড়বেন, লোকলজ্জায় তাঁকে ফেলাও চলবে না। যন্ত্রণা কমাবার জন্যে এক-আধবার মরফীন দেওয়া চলে, কিন্তু একটা মানুষকে চিরকাল নেশাখোর করে রাখা কি উচিত?

 ভবতোষ। অজয়ের কথা খুব ঠিক। নিখিল যা বললে তা ক্ষেত্রবিশেষে চলতে পারে, যেখানে শোক সইবার শক্তি নেই, যুক্তি বোঝবার মতন বুদ্ধি নেই, অন্য সন্তানের সম্ভাবনাও নেই। সুভদ্রার ওপর কোনও ভার চাপানো উচিত নয়। এখন তাকে নানা রকমে অন্যমনস্ক আর প্রফুল্ল রাখবার চেষ্টা করতে হবে।

 নিখিল। আচ্ছা, অজয়ের স্ত্রী যদি মন্ত্র নিয়ে পূজাঅর্চায় মগ্ন হয়ে থাকে তো কেমন হয়?

 অজয়। তাতেও আমার আপত্তি আছে। সেদিন এক বনেদী বড়লোকের বাড়ি গিয়েছিলাম। তাঁর বৈঠকখানায় তিনটি বড় বড় অয়েল পেণ্টিং আছে, প্রত্যেকটিতে একজন মহিলা সেজেগজে আসনে বসে পূজো করছেন। সামনে সোনারূপোর হরেক রকম পূজোর বাসন ঝকমক করছে, নানা

১৪৬