পাতা:কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কৃষ্ণকলি

 মেয়েটির সাজ দেখবার মত। সদ্য স্নান করে এসেছে, এলো চুল পিঠের ওপর ছড়ানো। একটি ফরসা লালপেড়ে শাড়ি কোমরে জড়িয়েছে। গা খোলা, কিন্তু আঁচলের এক দিক মাথায় দেবার চেষ্টা করছে আর বার বার তা খসে পড়ছে। গোল গোল দুই হাত যেন কষ্টি পাথরে কোঁদা, তাতে ঝকঝকে রূপোর চুড়ি আর অনন্ত, কোমরে রূপোর গোট, গলায় লাল পলার মালা, পায়ে আলতা, হাতে আলতা, সিঁথিতে সিঁদুর। জিজ্ঞাসা করলাম, একি খুকী, বিয়ে করলে কবে?

 মাথার ওপর কাপড় টেনে খুকী বললে, কী ব’লো নি বাবু, এখন বড় হইছি। আমার নাম কেলিন্দী।

 আমি বললুম, কেলিন্দী নয়, কালিন্দী। কিন্তু তোমার আরও ভাল নাম আছে, কৃষ্ণকলি। রবি ঠাকুর তোমাকে দেখে লিখেছেন—কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি, কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক। ... কালো? তা সে যতই কালো হ’ক, দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ। কৃষ্ণকলি নাম তোমার পছন্দ হয়?

 কালিন্দী ঘাড় দুলিয়ে জানালে যে খুব পছন্দ হয়।

 —তোমার বিয়ে হল কবে?

 —সেই অঘ্রান মাসে।

 —শ্বশ‍ুরবাড়ি কোথায়? বরের নাম কি?

 —ধেৎ, বরের নাম বুঝি বলতে আছে! শ্বশ‍ুরঘর হুই হোথাকে, ছুতোর-বউ মুড়িউলীর দোকানে। দাদু, ওই রাঙা ফল দুটো দাও না, মা পূজো করবে।