আমার যাহাকে ইচ্ছ, তাহাকে বিষয় দিব। তুমি এই বিবাহ করিলে আমি উইল বদলাইব বটে, কিন্তু তাহাতে তোমার অনিষ্ট ব্যতীত ইষ্ট হইবে না।” - ইহার কিছু পরেই হরলাল সংবাদ পাঠাইলেন যে, তিনি বিধবাবিবাহ করিয়াছেন। কৃষ্ণকান্ড রায় আবার উইলখানি ছিড়িয়া ফেলিলেন। নূতন উইল করিবেন। পাড়ায় ব্ৰহ্মানন্দ ঘোষ নামে এক জন নিরীহ ভাল মানুষ লোক বাস করিতেন। কৃষ্ণকাণ্ডকে জ্যেঠা মহাশয় বলিতেন। এবং তৎকর্তৃক অনুগৃহীত এবং প্রতিপালিতও হইতেন। ব্ৰহ্মানন্দের হস্তাক্ষর উত্তম। এ সকল লেখা পড়া তাহার দ্বারাই হইত। কৃষ্ণকান্ত সেই দিন ব্রহ্মানন্দকে ডাকিয়া বলিলেন যে, “আহারাদির পর এখানে আসিও । নূতন উইল লিখিয়া দিতে হইবে।” বিনোদলাল তথায় উপস্থিত ছিলেন । তিনি কহিলেন, “আবার উইল বদলান হইবে কি অভিপ্রায়ে ?” কৃষ্ণকান্ত কহিলেন, “এবার তোমার জ্যেষ্ঠের ভাগে শূন্ত পড়িবে।” বিনোদ । ইহা ভাল হয় না। তিনিই যেন অপরাধী। কিন্তু তাহার একটি পুত্র আছে—সে শিশু, নিরপরাধী। তাহার উপায় কি হইবে ? - কৃষ্ণ । তাহাকে এক পাই লিখিয়া দিব । বিনোদ । এক পাই বখরায় কি হইবে ? - o কৃষ্ণ । আমার আয় দুই লক্ষ টাকা । তাহার এক পাই বখরায় তিন হাজার টাকার উপর হয়। তাহাতে এক জন গৃহস্থের গ্রাসাচ্ছাদন অনায়াসে চলিতে পারে। ইহার অধিক দিব না। বিনোদলাল অনেক বুঝাইলেন, কিন্তু কর্তা কোন মতে মতান্তর করিলেন না। দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ব্ৰহ্মানন্দ স্নানাহার করিয়া নিদ্রার উদ্যোগে ছিলেন, এমত সময়ে বিস্ময়াপন্ন হইয়া দেখিলেন যে, হরলাল রায় । হরলাল আসিয়া তাহার শিওরে বসিলেন । ব্রহ্মা। সে কি, বড় বাৰু যে ? কখন বাড়ী এলে ? হর। বাড়ী এখনও যাই নাই। : o ব্র । একেবারে এইখানেই ? কলিকাতা হইতে কতক্ষণ আসিতেছ ? ~
পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১১
অবয়ব