পাতা:কোন পথে? - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/২০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SYS কোন পথে ? এই পৰ্যায়ে যে প্রশ্ন স্বভাবত দেখা দেবে তা এই : “বামপন্থীরা ও অন্যান্যরা আমাদের ত্যাগ করল কেন ?”, যতখানি আমি বুঝেছি, কংগ্রেস থেকে বিতাড়িত হবার ভয়ে তারা ভীত এবং হয়ত তারা মনে করে, একবার কংগ্রেসের বাইরে এলে, তারা সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আমার কাছে যা কৌতুকপ্ৰদ মনে হয় তা এই যে, এই কমরেডরা আশা করেছিল দক্ষিণপন্থীদের সঙ্গে তারা লড়াই করবে, অথচ এটুকু তাদের মাথায় আসেনি যে, বামপন্থীদের হাতে পরাজিত হবার আগে দক্ষিণপন্থীরা যা কিছু খারাপ করতে পারে তা করবে: এবং কংগ্রেসে তাদের আধিপত্য বজায় রাখতে সাধামত চেষ্টা করবে। দক্ষিণপন্থীদের সঙ্গে সাফল্যের সঙ্গে লড়াই করতে হলে যে মেরুদণ্ড, যে দৃঢ়তা ও অনমনীয়তা থাকা দরকার এইসব বামপন্থী ( অথবা এদের কি ভুয়ো-বামপন্থী বলব ) কমরেডদের তা নেই। আমরা আমাদের সংগ্রামের এমন একটা পৰ্যায়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি। যখন ইতিহাস আমাদের সবাইকে পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যাচাই করে নেৰে এবং ভারতে যথাৰ্থ বামপন্থী কারা দুনিয়ার কাছে তা জানিয়ে দেবে। আমাদের আরও বলা হয়েছে যে গান্ধীবাদীদের সাহায্য বিনা আমরা যে সংগ্রাম শুরু করেছি তা ব্যর্থ প্রমাণিত হবে । এই অভিযোগ সম্পর্কে আমাদের জবাব এই । আমাদের সংগ্ৰাম সাফল্যমণ্ডিত হবে কি হবে না। সে সম্পর্কে এত আগে কিছু বলা চলে না । জনগণের তাতে যোগ দেওয়া না দেওয়ার উপর তা নির্ভর করছে। অহিংস সংগ্রামের পতাকাতলে জনতাকে জমায়েত করা সর্বদাই কিছুটা সময়সাপেক্ষ । অতএব আমাদের পক্ষে কিছুক্ষণ ধৈৰ্য ধরে অপেক্ষা করা ভালো । কিন্তু, তর্কের খাতিরে যদি ধরেই নেওয়া হয় যে সংগ্রাম ব্যৰ্থ হবে, তার অর্থ কি এই যে, তা শুরু করা উচিত হয়নি ? অন্য দিক থেকে আমরা কি এই যুক্তি দিতে পারি না যে, ১৯২১, ১৯৩০ ও ১৯৩২-এর আন্দোলন শুরু করা উচিত হয়নি যেহেতু তার দ্বারা আমাদের স্বরাজ লাভ হয়নি ? ব্যর্থতা প্রায়শই সাফল্যের প্রস্তুতি ।