পাতা:কোন পথে? - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/২৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SVS 3. কোন পথে ? “বিধৃত চিত্ৰ'-কে মিথ্যা বলে বরবাদ করা ঠিক নয়-যদিও একটা বিধৃত চিত্র অপর একটি থেকে বেশী মাত্রায় মূলানুগ। রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ দর্শনের কোন মতবাদকেই নিন্দা করেন নি। তঁরা বলেছেন, “মানুষের যাত্র মিথ্যা থেকে সত্যের অভিমুখে নয়, সত্য থেকে আরও বড় সত্যের দিকে।” আমার মতে তঁরা ঠিকই ভেবেছিলেন যে প্রতিটি দার্শনিক চিন্তাধারায় কিছু পরিমাণে সত্য ८ ।। পরম তত্ত্বকে নানাপ্রকার আখ্যা দেওয়া হয়েছে যেমন “ভাব।” বা “আদিভাব” ( হেগেল), এষণা ( ফন হাটম্যান ) “এল ভিটােল’ বা প্ৰাণিত আবেগ (বাৰ্গসঁ, ), ‘চিৎ? বা চেতনা ( বেদান্ত ), “আনন্দ”- ( বেদান্ত ), ‘শক্তি’ বা ক্ষমতা ( তন্ত্র ), প্ৰেম ( প্ৰাচ্য ও পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দর্শন ) ইত্যাদি । এই ধারণাগুলি সবই সত্য, যদিও কেবলমাত্র অংশত সত্য-তবে আমার মতে ‘চিৎ’, ‘প্ৰাণ’ এবং ‘প্রেম’ আর সবের থেকে অধিক সঠিকভাবে দেশকালাতীত সদ্বস্তুর প্রকৃতি জ্ঞাপন করে । মানুষ হিসাবে আমাদের সীমিত ক্ষমতা সত্ত্বেও পরম তত্ত্বকে ধরবার প্রয়াস না করে আমরা পারি না, অংশত আমাদের দুর্দমনীয় দার্শনিক মনোবৃত্তির জন্য এবং অংশত যেহেতু নীতিতত্ত্ব, অর্থনীতি ও রাজনীতির কোন মতবাদের পক্ষে পরমতত্ত্বের প্রকৃতি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ধারণা থাকা দরকার সেই কারণে। আমাদের চূড়ান্ত ভিত্তিভূমি হিসেবে এই প্রকার কোন ধারণা না থাকলে আমাদের ভুল করার সম্ভাবনা থেকে যাবে। এবং আমরা যে কোনরূপ সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই না কেন তাকে দেশকালাতীত এই সদ্বস্তুর সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষা করতে হবে । দ্বিতীয় দার্শনিক সমস্যা “এই জগতের এবং অভিব্যক্তি প্রক্রিয়ার প্রকৃতি কী ?” এই সমস্যা পরিদৃশ্যমান জগৎ সম্পর্কিত এবং এর অন্তনিহিত পরম সদ্বস্তু সম্পর্কিত নয় । সমস্যাটির দুটি দিক অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত। তা সত্ত্বেও প্রথমটির থেকে দ্বিতীয়টির ব্যবহারিক গুরুত্ব বেশি । সম্ভবত এই সমস্যা সমাধানের প্রাচীনতম বৈজ্ঞানিক প্ৰয়াস